তপন দেববর্মা▪️ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সদ্য শেষ হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ পরবর্তী প্রভাব বিরাজ করছে সর্বত্রই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জনগনের অর্জনই বলা চলে কারন এই নির্বাচনের ফলাফলের মধ্যদিয়ে শাসিত সরকারের প্রার্থীকে টপকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় যা অত্র অঞ্চল ছাড়িয়ে দেশ ও বিদেশ পর্যন্ত আলোচনা ও পর্যালোচনা হয়েছে। যা অত্র অঞ্চলের সুখ্যাতি হিসেবে বিবেচনা আসায় জনগনের মাঝে এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক ময়দানে এক সুখকর পরিবেশ সৃস্টি হয়।
আর সদ্য শেষ হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ ও চুনারুঘাট মাধবপুর রাজনৈতিক ইতিহাসের চিরাচরিত অনুমেয় কাঠামোবদ্ধ রাজনীতির বাহিরে। কারন জনগন বলছে, এবার দেখি কি হয়!
একবিংশ শতাব্দির উন্নয়নের রোল মডেল একটি চলমান ইস্যু। অর্থাৎ সারাদেশের উন্নয়নের সাথে এই এলাকার উন্নয়ন কতটুকু সাম্যকভাবে অগ্রাধিকার পেয়ে আসছিল তা পূর্বের জনপ্রতিনিধির কাজ তথা উন্নয়ন চিত্র পর্যালোচনার মধ্যেদিয়ে পরিমাপ সম্ভব হয়।
জনগন বলছে, একটি বিশেষ কথা, এই অঞ্চলে তেমন অগ্রসরমান উন্নয়ন ছিল না এবং যে সব উন্নয়ন হয়েছিল সেটি উন্নয়ন মডেলের রোডম্যাপে খুবই দুর্বল অবস্থানে ছিল। অর্থাৎ উন্নয়ন ছিল কিন্তু সেসব উন্নয়ন ছিল অপর্যাপ্ত। এই কথা বলার শক্ত ভিত্তি হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন পরবর্তী জনগনের প্রতিক্রিয়া।
জনগন এও বলছে, উন্নয়ন হতে হবে দৃশ্যমান পদ্ধতিতে উদাহরণস্বরূপ, আমার এলাকার গুরুত্বপূর্ন পজিশনে একটি কালভার্ট দরকার তাই দ্রুততার সাথে সেটি হতে হবে, তখন জনপ্রতিনিধি সেটি তাৎক্ষনিক ঘোষনা এবং পদক্ষেপের মাধ্যমে সেটি সম্পন্ন করলে সেটি হবে দৃশ্যমান উন্নয়ন।
এখানে প্রশাসনিক জটিলতা, নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা, উন্নয়নের বাজেট তসরুপের চেষ্টা যা বাজেট বরাদ্দের সঠিক তথ্য জনগনকে অবহিত না করা, চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারীদের কাজে অবহেলা ইত্যাদির সঠিক তদারকির অভাবে দৃশ্যমান উন্নয়নে বাঁধাগ্রস্ত হওয়া, যেটাকে জনগন জনপ্রতিনিধির ব্যর্থতার কারন হিসেবে চিহ্নিত করে যা উন্নয়নের পর্যায়ে পরে না।
আরেকটি সমস্যা ছিল উন্নয়নের প্রভাবক গুলো চিহ্নিত করে সেগুলো নিয়ে কাজ না করা। যেমন, পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনা স্বরূপ অবহেলিত স্থান গুলোকে পুনর্গঠন ও আলোকসজ্জা যা একটি উন্নয়ন প্রভাবক।
এখন জনগন বলছে, এসময়ে আমরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বিনোদন পাচ্ছি, উপর্যুক্ত পরিবেশে মুহুর্ত গুলো মুঠোফোনে ক্যামেরায় বন্দি করতে পারছি। এখন আগের চেয়ে পরিবেশ উপভোগ্য।
আবার পরিত্যক্ত ও অবহেলিত-উপেক্ষিত ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে পুনর্খনন ও পুন সজ্জিত করে শহরকে উজ্জীবিত করা দরকার, কারন অপরিস্কার ও নর্দমায় এত দিন উন্নয়ন ঢাকা ছিল যা কাম্য ছিল না। সুতরাং এই পরিচ্ছন্নতা নীতি একটি উন্নয়ন প্রভাবক। যা পূর্বে হয়নি এখন হয়েছে সুতরাং জনগন বলছে এখন উন্নয়ন হচ্ছে আগে হয়নি।
শুধু অবকাঠামোর উন্নয়ন তদারকি ও বাস্তবায়ন নয়, সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা উন্নয়ন, খেলাধুলা ও মেধা মনন চর্চার উন্নয়ন, পিছিয়ে পড়া বা অনগ্রসর জাতি গোষ্ঠীর কিংবা এলাকার সার্বিক উন্নয়ন, তরুন সমাজকে আলোকিত করতে উদ্দিপনামুলক বক্তব্য প্রদান ও আর্থিক অনুদান ইত্যাদির তদারকি সহিত বাস্তবান ও দরকার।
এখন জনগন বলছে, আগে জনপ্রতিনিধি আসতো বহর নিয়ে, উন্নয়ন কাজের উন্মোচন করে, নেতাগো সাথে বৈঠক করে আবার ফিরে যেতো। আর এখন জনপ্রতিনিধি খুঁটিনাটি সমস্যা চিহ্নিতকরণ,তারপর এলাকার সকলের মতনিয়ে সমাধানের কৌশল নিরুপন করে সমাধানের পদক্ষেপ নিবেন। জনগন বলছে, আগে এমনটা ছিল না কিন্তু এখন উন্নয়ন হচ্ছে।
হবিগঞ্জ জেলার শিল্প কারখানা অগ্রগতিতে এ অঞ্চলের ভূমিকা অনেক। দেশী ও বিদেশী কোম্পানিগুলো এ এলাকায় কারখানা স্থাপন করাতে এলাকার বানিজ্যিক উন্নয়নের অবস্থান ইতিবাচক হচ্ছে। আর দক্ষ জনবল ও শ্রমের চাহিদা মেটাতে এলাকার শ্রমবাজারে স্থানীয় লোকবলের নিয়োগের অগ্রাধিকার তো আছেই। আর কারখানা বিকটবর্তী ভূমির বাজার দর বাড়বে ফলে জনগনের আর্থিক লাভের সম্ভাবনাও বাড়বে।
এখন জনগনও ভাবতে বাধ্য হচ্ছে, শ্রেষ্ঠ ধনী উপজেলা হচ্ছে আমাদের উপজেলা। যা পূর্বে এই সমীক্ষালব্দ কথাটি কেউই জানত না। সুতরাং এই উন্নয়নের প্রভাবকের মধ্যে দিয়েও বুজাযায় উন্নয়ন হবে।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে আর দেশের অন্যতম রোলমডেল অঞ্চল হবে এমন স্বপ্নে বিভোর জনগন। সেই সাথে নিজেদের ভাগ্যকে বদলাতে চাইছে এই উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত থেকে। জনগন বলছে, আগে হয়নি এখন তো অন্তত হবে।
লেখা- তপন দেববর্মা
কে সিআর/২৪