আসাদ ঠাকুর◾
ধর্ম মানুষের ভিতর প্রেমের উদ্বোধন ঘটিয়েছে, আবার বিদ্বেষও সৃষ্টি করেছে। ধর্মের সমাজ-ঐতিহাসিক চিত্র তাই শুভ-অশুভের ছায়া-আলোকিত।
সমস্ত ধর্মের ভাবনাই সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ে। কিন্তু কার্যত ও শেষ বিচারে ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্প্রদায়গত। সব মানুষের জন্য কোন সর্বজনীন ধর্ম সৃষ্টি হয়নি। এই বাস্তব সীমাবদ্ধতাই ধর্মের মাঙ্গলিক প্রয়াসকে ঘৃণা- বিদ্বেষ- ঈর্ষা- বিরোধের অনিবার্য পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাই দেখা যায় স্বধর্ম অনুশীলনী মানুষ সর্বমানবিক মানুষ হয়ে উঠেছে এমন দৃষ্টান্ত দূর্লভ। এই সীমাবদ্ধতার সূত্র সন্ধানই শিক্ষার উদ্দেশ্য।
এই উপমহাদেশের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে ধর্ম কখন থেকে ধর্মমোহে রূপান্তরিত হলো কী পরিস্থিতিতে? ভারতবর্ষের প্রধানতম ধর্মগুলির রূপ ও রূপান্তর, উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ, প্রচার প্রবর্তন ও প্রসার কীভাবে? সমাজে তার প্রতিক্রিয়াই বা কী? প্রাচীন বা মধ্যযুগে নানা ধর্মের মধ্যে বিভেদ কেমন? তখন কি এই বিভেদ থেকে সংঘর্ষ হয়েছে? ঔপনিবেশিক পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি কেমন করে ক্রমশ বদলে গেল? সেই পরিবর্তনের কী প্রভাব পড়ল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে? স্বাধীনতা লাভের পর ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েও বাস্তবে কী দেখা গেল? কেন এই সংঘর্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গণহত্যা, সন্ত্রাস এখনও অব্যাহত? এসব তথ্যের ইতিহাস অনুসন্ধান "বাঙালির ধর্মচিন্তা" গ্রন্থে বিশদভাবে আলোকপাত করেছেন লেখক মোহাম্মদ আবদুল হাই।
ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। অথচ বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ক অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন রাখা উচিত।
সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।
কে/সিআর/২৪