স ম্পা দ কী য় ◾
মানুষের চিন্তার ভাষা- আকাঙ্ক্ষার ভাষা- চেতনার ভাষা- মুখের ভাষা- লেখার ভাষাই যে প্রতিবাদের ভাষা- স্লোগানের ভাষা- দেয়ালের ভাষা- প্ল্যাকার্ড-পোস্টারের ভাষা- এই ঐতিহ্যের শুরুটা ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে এই বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের মানুষের স্লোগানের ইতিহাস সেই ১৯৪৮ সাল থেকে- দেশভাগের পরের বছরেই। মানুষের মুখের কথাই- মনের কথাই- স্লোগান হিসেবে উজ্জীবিত করেছে। বিশেষ করে ভাষা আন্দোলনে ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানের মাধ্যমেই মানুষের তার প্রাণের দাবির কথা বলেছিল। দেয়ালে লেখা হয়েছিল কি না এই স্লোগান- এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে জানা যায় না- প্রচলনও ছিল না তখন। এই স্লোগানই মানুষকে করেছে আন্দোলিত। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পোস্টার ও প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’’, ‘‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’’।
শাসকের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক চাওয়া-পাওয়া, লেনদেনের এই দাবি মানুষ মুখেই বলে প্রথমে। তারপর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যায় নানা জায়গায়-নানা ভাষায়। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে স্বাধীন হতে যাওয়া বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকে দেয়াল লেখার প্রচলন শুরু হয়। তারপর আর কখনও খালি থাকেনি কোনও দেয়াল- সেই দেয়াল লিখন- চিকামারা- মানুষের শরীরেও লেখা হয়েছে সেই দাবির ভাষা।
২০২৪-এর অভ্যুত্থানের একটি বড় স্মারক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রগুলি। এই অঙ্কনগুলিকে গ্রাফিতিও বলা হচ্ছে। গ্রাফিতি পশ্চিমা পথশিল্পের জনপ্রিয় একটি ধারা। এ ধরনের দেয়ালচিত্র আর লেখাজোখা দর্শককে আঘাত করবে, বিব্রত করবে, প্রশ্ন করবে আইন-কানুন, সরকার-দেশ-জাতি-রাষ্ট্র-ধর্ম সবাইকেই। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশেও গ্রাফিতি শব্দটি এখন বহুল আলোচিত।
এই দেয়ালচিত্রগুলির বক্তব্য বোঝার চেষ্টায় কালনেত্রের আয়োজন- "দেয়ালের ভাষা বোঝার আশা"।
দ.ক.সিআর-২৪