স ম্পা দ কী য় -
প্রতিনিয়ত বন্যা, নদী ভাঙ্গন ও দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় উত্তরবঙ্গের মানুষদের। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা সহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখের প্রধান কারণ। তিস্তা নদী নীলফামারী জেলা দিয়ে ও ব্রহ্মপুত্র নদী কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীগুলোতে আর নাব্যতা নেই। তাই উজানের দেশে বেশি বৃষ্টি হলে ও ভারত পানি ছেড়ে দিলে এ অঞ্চলে বন্যা হয়। বর্ষাকালে তিস্তায় অথৈ পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে দেখা যায় তিস্তা যেন এক বিস্তীর্ণ বালুচর। মাইলের পর মাইল পানি নাই। পানির অভাবে জমিতে সেচ ও কৃষি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়; ফসল হয় না। ফলে বছরজুড়ে বন্যা ও ক্ষরায় এ অঞ্চলের মানুষের অভাব আর দারিদ্রতার সীমা থাকে না।
কথায় বলে ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা। এই জ্বালার সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে উত্তরবঙ্গের এসব মানুষ। সরকারের উচিত এই অঞ্চলের মানুষের জন্যে বরাদ্দ বাড়ানো। সেই সঙ্গে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা, গবাদি পশু, বীজতলা, ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক দ্রুত মেরামত করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করা। তবে বন্যা মোকাবেলায় সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও প্রয়োজন ও বাস্তবতার নিরীখে পর্যাপ্ত নয়।
এখন দেশে ঘন ঘন বন্যা হচ্ছে। শুধু উত্তরাঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বছরে দুই থেকে চার বার বন্যা হচ্ছে। বাংলাদেশের বন্যার ধরণ ও পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা থেকে জানা যায়, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকায় গড়ে তোলা প্রায় ৫০০টি বাঁধ, ব্যারাজ ও জল বিদ্যুত কেন্দ্র বিভিন্ন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করছে। এগুলোর বেশির ভাগই ভারত, চীন ও নেপালে। তারা পানি ছেড়ে দিলে ও বেশি বৃষ্টি হলেই বাংলাদেশের নদ নদীতে প্রচুর পানি চলে আসে।
উত্তরবঙ্গের এই অবলেহিত জনগোষ্ঠীর জন্য বন্যার মত দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা তৈরি করতে পারলেই হবে অত্র অঞ্চলের মানুষদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সরকারের সুনজর ছাড়া যা সম্ভব নয়।
দ.ক.সিআর-২৪