➖
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিচারাঙ্গনে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না, সবাই ন্যায় বিচার পাবেন- এমনই আশা করা হয়েছিল৷ কিন্তু বাস্তবে অন্তর্বর্তী সরকারে সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন আইনজীবীরা৷ ছাত্রদের দাবির মুখে ১২ বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার মতো ঘটনাও ঘটেছে৷
এর আগেও বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার শুরুর দিকে আদালতে মিছিল নিয়ে গিয়ে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির অপসারণ চাওয়া হলো৷ পরবর্তীতে তাদের চাওয়া অনুযায়ী বিচারপতিদের সরে যেতে হলো৷ একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেওয়ার কথা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর তার ব্যাপারে আপত্তি তোলা হলো৷ এক পর্যায়ে তাকে সরিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হলো৷
গত আড়াই মাসে যাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে নেওয়া হয়েছে, তাদের সবাইকে অপদস্থ করা হয়েছে৷ যারা ডিফেন্স করতে যাচ্ছেন, তাদের উপরও হামলা করা হচ্ছে৷ আক্রমণ করা হচ্ছে৷ অথচ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাদী ও আসামি দুই পক্ষেই আইনজীবী থাকতে হয়৷ কিন্তু বর্তমান সরকারের সময় আসামি পক্ষকে আইনজীবী রাখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না৷ প্রত্যেক আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকে৷ সেই সুযোগও পাচ্ছেন না তারা।
বিগত সরকারের মন্ত্রী-এমপি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ব্যক্তির গ্রেপ্তারের খবর জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে মনযোগ আকর্ষণ করেছে৷ তাদের অধিকাংশকে আদালতে নেওয়ার সময় তারা নানা ধরনের হেনস্থার শিকার হয়েছেন।
প্রথমদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের পক্ষে কেউ আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াচ্ছিলেন না৷ আসামীদের আদালতে তোলার সময় তারা নানা ধরনের নিপীড়নের শিকার হচ্ছিলেন৷ এমনকি নারীদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি৷ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি বা সাংবাদিক ফারজানা রূপাও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন৷ সম্প্রতি অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ালে তাদের উপরও হামলা করা হচ্ছে৷ মারধর করা হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ বলছে, ‘‘আসামীর পক্ষে আইনজীবীর দাঁড়াতে পারাটা অধিকার৷ সেটাই নিশ্চিত করা হচ্ছে না৷ সবাই নাগরিক কি না সেটাই এখন প্রশ্ন৷ একটা পক্ষ বলতে চাচ্ছে, আরেক পক্ষ এদেশের নাগরিকই না৷ আমরা আগের পথেই চলে গেছি কিনা সেটাও ভাববার বিষয়৷ একটাই পার্থক্য শুধু পুলিশ গুলি করছে না৷ দেশে সরকার দুইটা কিনা সেটাও প্রশ্ন! ছাত্ররাও সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, আবার যারা শপথ নিয়েছেন তারাও চালাচ্ছেন৷ ছাত্রদের চাওয়াতেও পরিবর্তন হচ্ছে৷ প্রত্যাশা করেছিলাম, পরিবর্তন আশা করেছিলাম, সেটা হয়নি৷ আশাটা পূরণ যে হবে সেটার লক্ষন দেখছি না৷ এই বিষয়গুলো খুবই হতাশাজনক!
দ.ক.সিআর.২৪