কালনেত্র প্রতিবেদক◾
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলেও প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সঙ্গে কোনোভাবেই পেরে উঠছিল না প্রশাসনের কেউই।
এভাবে চলতে থাকলে চুনারুঘাটের পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দরাও। তারা বলেন, কেবল জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব পর্যায়ের দায়িত্বরতরা এবং স্থানীয়ভাবে সচেতন মহল রুখে না দাঁড়ালে এ সিন্ডিকেট মোকাবিলা করা যাবে না। কেননা অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যের এ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন দেন-দরবারের মাধ্যমে।
এছাড়া বালু উত্তোলনকারীরা বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে রাজনৈতিক মহল বিশেষের সঙ্গে চুক্তি করে বালু উত্তোলন করে আসছিল।
জানা গেছে, চুনারুঘাট থানার নবাগত ওসি নজরুল ইসলাম যোগদানের পরপরই সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পরিবেশ ও নদী ভাঙ্গনে বালু উত্তোলনের প্রভাব বিষয়ে একটি তদন্তের আদেশ আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওসি নজরুল ইসলাম চুনারুঘাটের বালু মহালগুলোতে অভিযান চালান। এবং সরেজমিনে গিয়ে দেখেন উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের সিলিকা বালুমহালের ইজাদার সুজাত ভুইয়ার দ্বারা ইছালিয়া ব্রীজের সন্নিকটে বাড়তি টাকার আশায় প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে ছড়ার পাড়ের মাটি কেটে সাবাড় করছে। এতে ইছালিয়া ব্রীজের এপ্রোচের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই অভিযোগে ওসি নজরুল ইসলাম সুজাত ভুইয়ার বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন।
স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, সামান্য খরচে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা অনেক বেশি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এমন লাভের কারণে বালু দস্যুরা বিশেষ কৌশলে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসি ল্যান্ড, জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ টাকা জরিমানা, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডসহ ড্রেজার ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আটক করলেও থামানো যাচ্ছিল না তাদের।
তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ওসিকে জানান, ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আগের উদ্যোমে পুনরায় বালু উত্তোলন কাজে নেমে পড়ে তারা। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল এসবের সাথে জড়িত বলে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা ওসিকে আরও বলেন, চুনারুঘাটে অবৈধ বালু উত্তোলনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন রয়েছে বলেও বহু অভিযোগ পাওয়া যায়। অনেক জায়গায় এর সত্যতাও রয়েছে।
এতসব তথ্য উপায়ত্ত এবং সরিজমিন অভিযানের ভিত্তিতে ওসি নজরুল ইসলাম গাজীপুর বালুমহালের অফিস কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের শাসিয়ে আসার পরপরই শুনতে পাওয়া যায়, কোন স্বাক্ষ্য প্রমাণ বা লিখিত অভিযোগ ছাড়াই সুজাত ভুইয়া কর্তৃক প্রথম আলোতে নিউজ আসে ওসি নজরুল ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায়ের অপপ্রচার!
অথচ বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলনের পরপরই চুনারুঘাট থানায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন ওসি নজরুল ইসলাম। শুধু চুনারুঘাটের আওয়ামী রাজত্বের রেখে যাওয়া পতিত সরকারের দোসরদের চক্রান্তে আজ লোকটি বিতর্কের শিকার!
দ.ক.সিআর.২৪