1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রাণঘাতী বজ্রপাত হচ্ছে; সতর্ক করলেন আবহাওয়াবিদ ভারতে ১৭০ টি মাদ্রাসা সিলগালা! চুনারুঘাটে কৃষি কার্ড নিয়ে বিএনপি নেতার বক্তব্যে এলাকায় বিরুপ সমালোচনা! দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘর সহ সবজি বাগান পুড়ে ছাই; ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি মাধবপুরে বিরল প্রজাতির ঈগল উদ্ধার মাধবপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর মা-বোন গ্রেফতার হবিগঞ্জে হাওরে বোর ধান কাটার উৎসব উদ্বোধন করলেন প্রশাসক মিয়ানমারে আটক ২০ বাংলাদেশিকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর অবশেষে মুক্তা ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী- চোরাচালান ও মাদক পাচার প্রতিরোধে বিজিবি’র জনসচেতনতামূলক সভা

শিশুকে প্রথমবার স্কুলে ভর্তির সঠিক সময় কখন, মনোবিদদের পরামর্শ

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

কালনেত্র ডেস্ক◾

বাবা-মায়ের চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু তাদের সন্তান। আর আদরের সন্তানকে প্রথমবার স্কুলে দেয়া নিয়ে বাবা-মা বেশ চিন্তায় থাকেন। বিশেষ করে নতুন বছরের এই সময়ে স্কুলে ভর্তি শুরু হয়। তবে সন্তানকে শুকে ভর্তি করানোর সঠিক সময়ের বিষয়ে অনেক বাবা-মা জানেন না। আবার অনেকেই ভাবেন শিশু ভালোভাবে কথা বলা শিখলেই তাকে স্কুলে দেখা যাবে। শিশুদের স্কুলে ভর্তির সঠিক সময় নিয়ে চ্যানেল 24 সঙ্গে কথা বলেছেন মনোবিজ্ঞানী সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

শিশুকে স্কুলে ভর্তির সঠিক সময়: সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি বলেন, শিশুর স্কুলে ভর্তির সময় সাধারণত একেক দেশে একেক রকম। এ কারণে দেশভেদে শিশুরা ভিন্নভিন্ন সময়ে স্কুলে ভর্তি হয়। যেমন বাংলাদেশে সাধারণত ৫ থেকে ৬ বছর বয়সে শিশুদের স্কুলে যায়। আমরা মনোবিজ্ঞানী বলি শিশুদের বয়স ৫ হলে তাদের স্কুলে ভর্তি করতে। কারণ এই বয়সে শিশুরা অক্ষর বা সংখ্যা শিখতে শুরু করে। এমনকি তারা গণনা করতে শিখে এই সময়ে।

তিনি আরও বলেন, তবে কিছু শিশুকে পাঁচ বছর হওয়ার আগেই তাদের স্কুলে দিতে হবে। কারণ অনেক শিশুরা ৫ বছর বয়সের আগেই অক্ষর চিনতে পারে সেইসঙ্গে মুখে মুখে সংখ্যা গণনা করতে পারে। এছাড়াও বর্তমান বেশিরভাগ পরিবার একক পরিবার। আগে যৌথ পরিবারের সংখ্যা বেশি ছিল যার কারণে শিশু ছোট থেকেই সামাজিক বিষয়গুলো শিখতে পারতো। তবে এখন শিশুরা ঘরে থাকে, মাঠের সংখ্যা কম। যে কারণে শিশুরা তাদের সমবয়সীদের সঙ্গে খেলার সুযোগ কম পায়। যদি ৫ বছরের আগে শিশুদের প্রিস্কুলে দেয়া হয় তাহলে তারা সমবয়সীদের সঙ্গে খেলা শিখতে পারে। তাই যেসব শিশুরা এক বড় হচ্ছে তাদের ৫ বছরের আগে শিশুদের প্রিস্কুলে দেয়া যাতে পারে।

তবে কিছু শিশুর বয়স পাঁচ হওয়ার আগেই তাদের স্কুলে দিতে হবে। কারণ অনেক শিশুরা ৫ বছর বয়সের আগেই অনেক অক্ষর চিনতে পারে সেই সঙ্গে মুখে মুখে সংখ্যা গণনা করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

প্রিস্কুলে দেয়ার সুবিধা: শিশুদের প্রিস্কুলে ভর্তি করলে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে উল্লেখ করেন মনোবিজ্ঞানী সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি। সুবিধা উল্লেখ করে তিনি বলেন:

সমবয়সি শিশুদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পায়। এতে সে তার বয়স অনুযায়ী সামাজিক আচরণ শিখতে পারবে।

ক্লাসের নিয়মগুলো অনুসরণ করতে শিখবে।

বর্তমানে স্পিচ ডিলে হয় অনেক শিশুর। সেক্ষেত্রে প্রিস্কুলে ভর্তি করলে ভাষার বিকাশ হবে। অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে থেকে স্পিচ ডিলে থাকলে সেটা অনেক সময় ঠিক হয়ে যায়।

শিশুরা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে। ক্লাসে সবার সামনে রাগ হলেও কিংবা কান্না আসলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ঐ সময় থেকে।

এমনকি প্রিস্কুলে ভর্তির ফলে শিশুরা কিছু কাজ শিখে। এর মধ্যে রয়েছে নিজের টিফিন বক্স বের করে খাবার খাওয়া। খাবার আগে হাত ধোয়া। এমনকি টয়লেট ট্রেনিং এর বিষয়টিও তারা শেখে।

যদি একটা শিশুকে চার বছর বয়সে প্রিস্কুলে দেখা হয় তাহলে সে এই বিষয়গুলো আয়ত্তে আনতে শিখে যায়। যেটা এক বছর পর স্কুলে তাকে দারুণ সাহায্য করে, এমনকি শিশু পরিবারের সদস্যদের ছাড়া নিজের মত করে ঐ সময়টা থাকতে শিখে।

কম বয়সে শিশুকে লেখানো:

আমাদের দেশের অনেক বাবা-মায়েরা তাদের অতিরিক্ত চিন্তা থেকে খুব কম বয়স থেকেই তারা শিশুকে লেখা শেখানোর চেষ্টা করে। দেখা যায় শিশুর বয়স আড়াই থেকে ৩ হলেই তাদের লেখা শিখাতে শুরু করেন তারা। কিন্তু এটা লেখা শেখানোর সঠিক সময় নয়। কারণ এই বয়সে শিশুর পরিপূর্ণ ফাইন মোটর দক্ষতা থাকে না। শিশুর হাতের আঙুল সেভাবে শক্ত থাকে না তাই সে ভালোভাবে পেন্সিল ধরতে পারে না। কিন্তু বাবা-মায়েরা শিশুকে চাপ দিতে থাকে। এটা শিশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর।

যেসব বিষয় থেকে বুঝতে পারবেন শিশুকে স্কুলে দেয়া যাবে:

মনোবিজ্ঞানী সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি বলেন বাবা-মায়েরা শিশুর কিছু বিষয় থেকে বুঝতে পারবেন তাকে স্কুলে দেয়ার সময় হয়েছে।

অ্যাকাডেমিক দক্ষতা:

প্রথমত শিশুর অ্যাকাডেমিক বিষয়ে কিছু ধারণা থাকবে। যেমন মুখে মুখে অক্ষর বলতে পারা, কিছু ছড়া বলতে পারা কিংবা দিনের নাম বলতে পারবে।

আচরণগত বিষয়:

শিশুদের আচরণগত বিষয়টিও দেখতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা। অনেক শিশু আছে যারা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে না।

মা-বাবাকে ছাড়া থাকা:

স্কুলে শিশুর সঙ্গে বাবা-মা থাকবে না। তাই যখন শিশু মা-বাবাকে ছাড়া থাকতে পারবে আমরা ধরে নেবে সে স্কুলে যাওয়ার উপযোগী।

অন্য শিশুদের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া:

সন্তান যখন অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে সেই সঙ্গে শেয়ার করতে শেখে তখন সে স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারা:

স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুকে নিজে থেকে টিফিন খাওয়ার বিষয়টি রপ্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে টয়লেটে যাওয়ার কথাও বলতে হবে। এমনকি নিজেই বই খাতা গুছিয়ে রাখতে পারবে। সে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। উদাহরণ টেনে বলা যায়, কিছু শিশু আছে সামান্য বিষয় নিয়ে কান্না করে অনেকে আবার খুব চিৎকার করে। যখন শিশুর মধ্যে এই সব আঁচরণ দেখা যাবে বুঝতে হবে সে আসলে স্কুলে যাওয়ার উপযোগী হয়নি।

সন্তান যখন অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে সেই সঙ্গে শেয়ার করতে শেখে তখন সে স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক গ্রহণযোগ্য আচরণ: এর মধ্যে রয়েছে চিৎকার না করা, থুথু না দেয়া। অন্য কারোর সঙ্গে মারামারি না করা। খেলায় অংশ গ্রহণ করা। স্কুলে যাওয়ার উপযোগী একটি শিশুর ফেতর এই বিষয়টা থাকতে হবে।

শিশু যদি স্কুলে যাওয়ার উপযোগী না হয় সেক্ষেত্রে: সব শিশু এক নয়। হতেই পারে শিশু স্কুলে এই বছর স্কুলে যাওয়ার উপযোগী নয়। তবে আগামী বছর তাকে স্কুলে দেখার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো পরিবার থেকে শেখাতে হবে। সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি বেশ কিছু বিষয় শেখাতে পরামর্শ দিয়েছেন। এগুলো হলো:

১.ফাইন মোটর স্কিল ডেভেলপ করা:

শিশুর ফাইন মোটর স্কিল নিয়ে কাজ করতে হবে মা-বাবাকে। এ কারণে শিশুকে রং পেন্সিল দিতে হবে। সে নিজের মত করে কালার করবে। ডট মিলাতে চেষ্টা করবে। এভাবে একটা সময় সে পেন্সিল ধরা শিখে যাবে খেলার ছলে।

২.সামাজিক পরিবেশে থাকতে শেখা:

স্কুলে যেহেতু অনেক শিশু থাকবে তাই তাদের সঙ্গে মিশতে শেখা জরুরি। এ কারণে শিশুকে বিভিন্ন সামাজিক পরিবেশে নিয়ে যেতে হবে শুকে দেয়ার আগেই। এটা কোনো অনুষ্ঠান হতে পারে, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় নিয়ে যাওয়া। কিংবা মার্কেটে গেলে তাকে সঙ্গে নেয়া।

শিশুর ফাইন মোটর স্কিল নিয়ে কাজ করতে হবে মা-বাবাকে। এ কারণে শিশুকে রং পেন্সিল দিতে হবে। সে নিজের মত করে কালার করবে।

৩.বই পড়ে শোনানো:

শিশুকে শুকে দেয়ার আগে বই পড়ে শোনাতে হবে। সেটা গল্পের বই হতে পারে কিংবা ছড়াও হতে পারে। এতে শিশুর মনোযোগ বাড়বে এবং বইয়ের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি হবে।

৪.শেয়ারিং:

শিশুকে স্কুলে গিয়ে অন্যান্য বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে হবে। তাদের একসঙ্গে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি করতে হবে তাই শেয়ারিং শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিশুর ভাইবোন থাকলে তাদের সঙ্গে দেয়া-নেয়া জাতীয় খেলা কিংবা খাবার শেয়ার করতে পারে। এতে সে শেয়ারিং শিখবে। ভাই-বোন না থাকলে বাবা-মা, পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে এই ধরনের অ্যাক্টিভিটি করতে পারে।

শিশুকে স্কুলে গিয়ে অন্যান্য বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে হবে। তাদের একসঙ্গে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি করতে হবে তাই শেয়ারিং শেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: সংগৃহীত

৫.চেয়ার-টেবিলে বসার অভ্যাস:

শিশুকে স্কুলে দেয়ার আগে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে টাকে চেয়ার-টেবিলে বসিয়ে কিছু অক্ষর বা নম্বর চেনাতে হবে। এতে করে সে চেয়ার-টেবিলে বসে থাকতে শিখবে। প্রথম দিকে শিশু বসতে না চাইলে তাকে চাপ দেয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য অ্যাক্টিভিটি যেমন গল্পের বই পড়ে শোনানো যেতে পারে কিংবা কালার করতে বলা যেতে পারে। এতে করে শিশুর মনোযোগ বাড়বে পাশাপাশি নির্দিষ্ট একটা সময় চেয়ার-টেবিলে বসার অভ্যাস হবে।

৬.স্কুল সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়া:

শিশুকে স্কুলে দেয়ার আগে তাকে স্কুলের বিষয়ে জানাতে হবে। স্কুলের পরিবেশ কেমন, সেখানে কি হয়, স্কুলে নতুন বন্ধু হয়, স্কুলে নতুন অনেক কিছু শেখা যায় এই সব ইতিবাচক বিষয়গুলো তাকে জানাতে হবে। অনেক বাবা-মা আছেন যারা শিশুকে স্কুল নিয়ে ভয় দেখায়। এমনটা করা যাবে না। শিশুকে আমরা স্কুল নিয়ে ইতিবাচক কথা বলবো যাতে সে স্কুলে যেতে আগ্রহী হয়।

দ.ক.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট