➖
কালনেত্র প্রতিবেদন
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন জুড়ে মরণনেশা মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। বাকী থাকেনি ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাজার বাজারও। বেচা-কেনার হিসাব থেকে শুরু করে সব কিছুই হয়ে থাকে এখন রাজার বাজারে। এখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য।
মাদকে আসক্ত হয়ে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে যাচ্ছে। কিছু চিহ্নিত মাদক কারবারি এ ব্যবসার সাথে জড়িত। দিনের পর দিন তারা এই নিষিদ্ধ কর্মকান্ড পুরোধমে চালিয়ে আসলেও রহস্যজনক কারণে মাদক কারবারিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
এক সময় খুব শান্ত ও মনোরম পরিবেশ বিরাজ করতো রাজার বাজারে। কিন্তু, কিছু অসাধু বিপদগামী মানুষের কারণে দিন-দিন ওই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এখন সেখানে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। কি নেই সেখানে! গাঁজা, মদ, ইয়াবা থেকে শুরু করে সব ধরনের মাদক সেবন ও বেচা-কেনা হয়ে থাকে।
তাছাড়া ইউনিয়নের আমুরোড বাজারেও অবাধে চলে সবরকমের মাদক বিক্রি ও সেবন। দিনের বেলায় মাদক কারবারীদের তেমন একটা চোখে না পড়লেও সন্ধা নামতেই তাদের আনাগোনা বেশ লক্ষনীয়।
জানা গেছে, উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে মাদক বেচা-কেনা ও মাদকের চিহ্নিত স্পট আমুরোড বাজারের পরিত্যাক্ত চুনারুঘাট-বাল্লা রেলওয়ে স্টেশন। এটি আমুরোড বাজার জামে মসজিদের পশ্চিম দিকে বর্তমান গরুর বাজারে অর্থাৎ খাদ্য গোদাম সংলগ্ন চেয়ারম্যান মার্কেট ও মার্কেট সংলগ্ন পুরো এলাকা। এখানে অচেনা বহিরাগতদের আনাগোনাও বেশ লক্ষনীয়। এখানেই মূলত মাদক কেনা-বেচার হিসাব থেকে শুরু করে রমরমা বাণিজ্য হয়ে থাকে।
মাদক ব্যবসার শক্ত একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে আমুরোড বাজারে। এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় কিছু চিহ্নিত অসাধু ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা। মাদক কারবারীদের অনেকেরই বিরুদ্ধে একাধিক মাদকের মামলাও রয়েছে। সুশীল সমাজসহ স্থানীয় লোকজনরা ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের আমুরোড বাজারটি এক সময় খুবই অবহেলিত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে বর্তমানে আমুরোড বাজারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে দুর-দুরান্তের মানুষজনও এখানে আসেন।
গেল বেশ কয়েক বছরের ব্যবধানে আমুরোডে ব্যবসার বিস্তার ঘটেছে। এই সুযোগে কিছু সুযোগ সন্ধানি দুস্কৃতকারীরা মাদকের ভয়াবহ থাবা বসিয়েছে। এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেদেরকেও মাদক পরিবহন ও সরবরাহ কাজে ব্যবহার করছে। ধীরে-ধীরে ওই দুস্কৃতকারী চক্রটি মাদক কারবারিতে পরিণত হয়েছে। তাছাড়াও রাত যত গভীর হয় মাদক কারবারীদের চলাফেরাও বেড়ে যায় সেখানে।
স্থানীয়রা বলছেন, এই এলাকাতে বেশ কয়েকদিন প্রশাসনের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী থাকলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। ইতিমধ্যেই মাদক বিক্রির কাঁচা টাকায় অনেকেই অনেক সম্পদও গড়ে তুলেছে। কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা ভরছে তাদের পকেটে। এরা অবৈধ ব্যবসার বিপুল টাকা দিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটও গড়ে তুলেছে এ এলাকায়। তাদের রয়েছে বেশ কিছু বাহিনীও। কেউ মাদকের বিরুদ্ধে কথা বললেই বাহিনীর লোকজন তেড়ে আসে প্রতিবাদকারীর দিকে। তাই, ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পর থেকেই এ অবস্থায় দাড়িয়েছে, এর আগে এমন অবস্থান ছিল না। প্রকাশ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুস্কৃতকারী চিহ্নিত ব্যক্তিরা মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছে, পাশাপাশি রমরমা জুয়া খেলার ব্যবসাও চলছে। অথচ রহস্যজনক কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। স্থানীয় এলাকাবাসীরা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলশি প্রশাসনের কাছে জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানসহ অবিলম্বে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
দ.ক.সিআর.২৫