দেশব্যাপী গাইড বই নিষিদ্ধ। তবুও কোন প্রকাশনীর প্রতিনিধি থেমে নেই। গাইড বইসহ কোনো লাইব্রেরি বা স্কুলে কেউ ধরা পড়লে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রশাসন ও আইনকে তোয়াক্কা করছে না কেউ। এই দালালচক্রে সাথে সক্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রধানগণ। উপজেলা জোড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘুষ বাবদ পনেরো লাখের অধিক টাকা বাজেট করেছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন পুস্তকালয় মাধ্যমে। দালালচক্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতিকে ঘুষ দেয় ছাত্রসংখ্যা অনুসারে। সহায়ক বইয়ের নামে নিম্নমানের পাবলিকেশন স্থানীয় পুস্তকালয়ের মালিকের মাধ্যমে বই বিক্রির টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা। সরকারি বেসরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে নোট গাইড শিক্ষার্থীদের ধরাতে শিক্ষকদের ম্যানেজ করতে লক্ষ লক্ষ টাকা ছড়ানো হচ্ছে উপজেলা জোড়ে বলে তথ্য মিলেছে।
সূত্রমতে, চুনারুঘাট উপজেলায় মোট প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭০টি ও মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক মাদ্রাসা, বিদ্যালয ৮৩টি।বিভিন্ন বিদ্যালয়প্রতি ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ দিচ্ছে পাবলিকেশনগুলো। গত ডিসেম্বর থেকে পাবলিকেশনের শতাধিক কর্মী প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-সভাপতি ও বিভিন্ন শিক্ষক সমিতির নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে মোটা অংকের টাকার ছড়াছড়ি। উপজেলায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে টাকা নিয়ে ছুটছেন নিষিদ্ধ গাইড সরবরাহকারী পাবলিকেশনগুলোর প্রতিনিধি। অর্থ হাতিয়ে শিক্ষার্থীদের গাইড কিনতে পরামর্শ দিচ্ছেন অনেক শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনিক অঞ্চলে অবস্থিত বিয়্যাম ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক অঞ্জন রায় সর্বোচ্চ উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। যার ফলে স্থানীয় একাধিক পুস্তকালয়ের বই পর্যালোচনা না করে ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছেন খুবই নিম্নমানের প্রকাশনীর বই। এ সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্বেও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন একাধিক পুস্তকালয়। কিন্তু উক্ত শিক্ষক এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে একাধিক পুস্তকালয়ের মালিকগণ। তারা জানান, তাদের নিকট ৪০/৫০ হাজার টাকা চাহিদা দিয়েছিলেন অঞ্জন রায়। কিন্তু ভালো মানের প্রকাশনী প্রতিনিধি চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় গাউছিয়া লাইব্রেরী নামে একই প্রতিষ্টানের সকল বই তিনি সিলেকশন করেছেন উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবকগণ অভিযোগ করে বলেন, আমরা আমাদের সন্তান কে সর্বোচ্চ দিয়ে পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু শিক্ষকদের নির্দেশনা মতে বই ক্রয় করতে গিয়ে রীতিমতো ভুক্তভোগী হচ্ছি। এমন কিছু বই সিলেকশন করা হয়েছে। যা আমরা একাধিক পুস্তকালয়ে যাচাই-বাছাই করে সূলভ মূল্যে কেনার সুযোগ পাচ্ছি না। একই পুস্তকালয় থেকে ক্রয় করতে গিয়ে কমিশন ছাড়াই বই আনতে হচ্ছে।
একসেট গাইডের দামও তাদের মতে গরিব অভিভাবকদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
অভিযুক্ত শিক্ষক অঞ্জন রায়ের সাথে কথা হলে তিনি উৎকোচ গ্রহণের কথা অস্বীকার করে পত্রিকা প্রতিনিধিকে দেখা করার অনুরোধ করেন। তাছাড়াও তিনি শিক্ষকদের মাধ্যমে রেজুলেশন করে বই চুড়ান্ত করেন বলে দাবি করেন। তবে কেন সিলেকশন করা বই একাধিক পুস্তকালয়ে পাওয়া যাচ্ছে না সে প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারেন নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন,বিষয়টি অবগত হয়েছি। আমি শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করবো।
দ.ক.সিআর.২৫