এফ এম খন্দকার মায়া, চুনারুঘাট
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় বিপাকে বোরো মৌসুমি কাষক।
গেলো এক বছরে উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে।এসকল ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় সেচপ্রকল্পের উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে উপজেলায় কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।বিশেষ করে সেচকাজে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৬নং সদর ইউনিয়নের শাইলগাছ গ্রামের মৃত আব্দুল গণির ছেলে মনিরুল ইসলাম ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে নিজ গ্রামের ৩টি ট্রান্সফরমার চুরি হওয়া অভিযোগ করেন। তিনি জানান,শুক্রবার দিবাগত শেষে পরদিন ভোরে দেখতে পান চোরেরা ট্রান্সফরমারের ভেতরের মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি করে বাইরের অংশ ফেলে রেখে গেছে।এবং তিনি দ্রুত চুনারুঘাট অভিযোগ দায়ের করে প্রতিকার চান।
চুনারুঘাট পল্লী বিদুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পল্লী বিদুৎ সমিতির আওতায় ৮৭ হাজার গ্রাহকের মধ্যে সেচ মিটার ব্যবহার করেন ১৫শ গ্রাহক। গত এক বছরে এ সমিতির আওতায় ৪৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সেচ মৌসুমে ট্রান্সফরমার বেশি চুরি হয়। চোরেরা মূল্যবান তামার কয়েল, তেলসহ যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে ট্রান্সফরমারের বাহিরের অংশ ফেলে চলে যায়।এতে ভুক্তভোগী কৃষকরা থানায় মামলা করলেও চোরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেক কৃষক উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন কাজিরখিল গ্রামের আনোয়ার হোসেন সহ আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের শুকদেবপুর গ্রামের আহাদ চৌধুরী বলেন, চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের সাহায্যে তারা তাদের ফসলি জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতেও সেচ দিয়ে থাকেন। গ্রামের শতাধিক কৃষক জমির সেচের জন্য তাদের ওপর নির্ভর করেন। এখন বোরো মৌসুম চলছে। খেতে পানি না দেওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।এ নিয়ে তারা কৃষকরা দুশ্চিতায় আছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান,জানুয়ারি মাসে উপজেলায় অন্তত ৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এখন পর্যন্ত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার করতে পারেন নি। পল্লী বিদুৎ সমিতির নিয়ম ট্রান্সফরমার চুরি হলে ট্রান্সফরমারের সম্পূর্ণ মূল্য দিতে হয় গ্রাহকদের। ট্রান্সফরমার চুরি হলে মূল্য পরিশোধের পরও নতুন করে ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন করতে এক সপ্তাহ সময় লেগে যায়। এ সময়টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয় গ্রাহকদের। এতে সেচ কাজ বিঘ্নিত হয়েছে
এ ব্যপারে চুনারুঘাট পল্লী বিদুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জুনায়দুর রহমান বলেন, চুনারুঘাট পল্লী বিদুৎ সমিতির আওতায় গত এক বছরে ৪৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, থানায় মামলা হলে এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ.ক.সিআর.২৫