➖
কালনেত্র প্রতিবেদন
বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা শৈশব থেকেই ধর্মীয় শিক্ষা থেকে দূরে রয়েছে। এক যুগ আগে দেখেছি প্রতিটি পাড়া মহল্লার মসজিদ থেকে সকালে কানে আওয়াজ আসতো আলিফ, বা, তা, ছা আর কালিমা পাঠের মিষ্টি মধুর সুর। শিশু-কিশোরের মুখ থেকে পবিত্র কোরআন পাঠ ও সূরা মশকের সেই আওয়াজে তখন মুখরিত থাকতো মক্তবগুলো। ভোরে ঘুম থেকে উঠে শিশুরা আরবি কায়েদা, আমপারা এবং পবিত্র কোরআন শরিফ বুকে নিয়ে মক্তবে ছুটে যেতো। ইদানিংকালে শহরে তো এমন দৃশ্যের কল্পনাও করা যায় না এমনকি গ্রামেও নেই এমন চিত্র। এখন শিশুরা মক্তবে পড়ার সময় পায় না। কারণ সকাল থেকে ব্যাগ নিয়ে ছুটে কোচিংয়ে কিংবা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। সকাল-বিকাল, সন্ধা প্রাইভেট, কোচিং এবং হোম ওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। ন্যাশনাল কারিকুলম অনুয়ায়ী পরিচালিত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ইসলাম শিক্ষা। তৃতীয় শ্রেণি থেকে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা নামে একটি পাঠ্যপুস্তক পাঠ্যসূচিতে থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ধর্মীয় শিক্ষা নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কুরআন শেখার ব্যাপারে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে তেমন আগ্রহ নেই মুসলিম সমাজে। একজন মুসলিম নর-নারী হিসেবে কোরআন শিক্ষা এবং পাঠের প্রতি আগ্রহ না থাকা খুব দুঃখজনক বিষয়। তবে কিছু শিক্ষার্থী আগ্রহী হলেও কোচিং এবং প্রাইভেট শিক্ষকদের কারণে তাও সম্ভব হচ্ছে না।
শিক্ষার্থী এবং সচেতন অভিভাবক সুত্রে জানা যায়- রমজানে স্কুলের ক্লাস না থাকলেও সকাল ১০টা থেকে ছেলে- মেয়েরা কোচিং শিক্ষকের কাছে পড়তে হয় এবং দুপুরে বাসার প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে হচ্ছে। কোরআন শিক্ষা কোর্সের মূল সময়টুকু কোচিং এবং প্রাইভেট এর শিক্ষকরা বরাদ্দ রেখে শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ কোরআন শিক্ষার প্রশিক্ষণ কোর্স থেকে বঞ্চিত করছেন।
তাছাড়া অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে নেই আরবি পড়ার বিশেষ সুব্যবস্থা। আজ থেকে এক যুগ আগেও আলাদাভাবে নামাজ রোজার নিয়ম কানুন, জরুরি মাসআলা-মাসায়েল, দোয়া-কালাম ইত্যাদি শিখানো শিখানো হতো মসজিদের মক্তবগুলোতে। সকালের মক্তব বিলীন হওয়ার কারণেই আরবি এবং ধর্মীয় শিক্ষা থেকে এ প্রজন্মের শিশু-কিশোররা বঞ্চিত হচ্ছে।
সকালের মক্তব বন্ধ হওয়ার পেছনে কেউ কেউ কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমুহকে দায়ি করছেন। কারণ হিসেবে বলছেন শিশুদের উপর কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বাড়তি পড়ার চাপ। রমজান মাসে পড়া-শোনার চাপ কিছুটা কম থাকলেও কোচিং এর চাপে আরবি পড়ার সুযোগ মিলছে না শিক্ষার্থীর। রমজান মাসে মুসলিম সন্তানরা যাতে করে পবিত্র কোরআন শেখার সুযোগ পায় এ ব্যপারে সংশ্লিষ্টদেও সুদৃষ্টি কামনা করছি।
দ.ক.সিআর.২৫