1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

বাধায় পণ্ড হিযবুত তাহরীরের কর্মসূচি

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে


কালনেত্র প্রতিবেদন

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না, এই ছিল পুলিশের হুঁশিয়ারি। সংগঠনটির কর্মসূচি ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া পাহারা ছিল জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। তারপরও জুমার নামাজের পর মিছিল বের করে সংগঠনটি। তখন পুলিশ বাধা দেওয়ার পাশাপাশি মিছিলকারী কয়েকজনকে আটক করে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি ডেকেছিল হিযবুত তাহরীর। জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রকাশ্যে আসা নিষিদ্ধ সংগঠনটির এই কর্মসূচি ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

বৃহস্পতিবার পুলিশ সতর্ক করে জানায়, হিযবুত তাহরীর এখনও নিষিদ্ধ রয়েছে এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের নামে কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না।

তারপরও হিযবুত তাহরীর তাদের কর্মসূচির পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার উত্তরায় অভিযান চালিয়ে সংগঠনটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে হিযবুতের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশপাশে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেন বায়তুল মোকাররমের সামনে।

জুমার নামাজ পড়তে যারাই এদিন বায়তুল মোকাররমে যাচ্ছিলেন, সবাইকে নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

জুমার নামাজের পর হঠাৎ হিযবুতের একদল সদস্য বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকের সামনের সড়কে ব্যানার খুলে দাঁড়িয়ে যান। তাদের প্রথাগত লাল-কমলা রঙের ব্যানারে লেখা ছিল- নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে মার্চ ফর খিলাফত। এছাড়া ‘মুক্তির এক পথ-খিলাফত খিলাফত’ লেখা আরেকটি ব্যানারও ছিল মিছিলে।

মুহূর্তেই সেই ব্যানারের পেছনে শ খানেক লোক দাঁড়িয়ে যান। পুলিশ গিয়ে সামনে থেকে বাধা দিলেও তারা সেই বাধা ঠেলে মিছিল নিয়ে এগোনো শুরু করে। সাদা, কালো, কমলা কাপড়ে কলেমা লেখা পতাকা ছিল মিছিলকারীদের হাতে।

মিছিলটি পল্টন থেকে বিজয় নগরের দিকে এগিয়ে আবার পল্টনের দিকে ফিরলে চড়াও হয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ধাওয়া করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন তারা। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়া হয়। মিছিল থেকে কয়েকজনকে ধরে নিতেও দেখা যায়।

ধাওয়ার মুখে পল্টনের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে যান মিছিলকারীরা। গলিতে ঢুকেও তল্লাশি চালাতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

মিছিল থেকে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদস্যরা পল্টন এলাকায় হ্যান্ড মাইক দিয়ে সবাইকে সরে যেতে বলছিলেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে বাংলাদেশে ২০০৯ সালে নিষিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংগঠনটি প্রকাশ্য হয়। ৭ আগস্ট সংসদ ভবনের সামনে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশও করে তারা।

এরপর শুক্রবার ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রচার শুরুর পর ঢাকা মহানগর পুলিশ বৃহস্পতিবার জানায়, বেআইনি সংগঠন হিসাবে হিযবুতের যেকোনো তৎপরতা প্রতিরোধ করা হবে।

ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার স্লোগান তুলে সংগঠিত হিযবুত তাহরীর একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। বাংলাদেশে ২০০০ সালের দিকে সংগঠনটির তৎপরতা শুরু হয়।

উগ্রবাদী তৎপরতার কারণে মুসলমানপ্রধান বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পর ২০০৯ সালে বাংলাদেশেও হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করা হয়। তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়।

এরপর বিভিন্ন সময় পোস্টার আর অনলাইনে প্রচারেই সীমিত ছিল সংগঠনটির কার্যক্রম। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংগঠনটি প্রকাশ্য হয়। গত ৭ আগস্ট সংসদ ভবনের সামনে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশও করে তারা।

সেই সমাবেশ আয়োজনের সময় হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, তারা কোনো জঙ্গিবাদী বা সন্ত্রাসী সংগঠন নয়।

শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের আন্দোলনে হিযবুত তাহরীরের কর্মীরাও মাঠে ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

তখন হিযবুতের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা উঠলেও পুলিশ তথা অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

নতুন করে সমাবেশ ডাকার পর বৃহস্পতিবার ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেআইনি সংগঠন হিসাবে হিযবুতের যেকোনো তৎপরতা প্রতিরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের আইনানুযায়ী একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

“সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ঘোষিত যেকোনো সংগঠন কর্তৃক সভা, সমাবেশ, মিছিল, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য উপায়ে প্রচারণাসহ সকল কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

হিযবুত তাহরীর সভা, সমাবেশসহ যেকোনো প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে পুলিশ ‘প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা’ নেবে বলে হুঁশিয়ার করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

তারপর রাতে উত্তরা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মনিরুল ইসলাম (৪০), মোহতাসিন বিল্লাহ (৪০) ও মাহমুদুল হাসান (২১)।

তিনজনই হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছে জানিয়ে পুলিশ বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে।

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট