➖
আসাদ ঠাকুর, অমনিবাস
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল চা। সারাদেশে চা বাগানের সংখ্যার দিক থেকে হবিগঞ্জের অবস্থান দ্বিতীয়। এ জেলায় উৎপাদিত চা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কিন্ত এ বছর চা বাগানগুলোতে শ্রমিক ধর্মঘট, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট, বৈরী আবহাওয়া ও মারাত্মক পোকামাকড়ের আক্রমণে চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালির চা শিল্প ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। ২০২৪ সালে ভ্যালির ২৫টি বাগানে চা উৎপাদন ৭ লাখ কেজি কমেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.৫৬% কমেছে
লস্করপুর ভ্যালির চেয়ারম্যান ও চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের ব্যবস্থাপক এসসি নাগ জানান, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, ও মাধবপুরের পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৪টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে।
এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৩৫টি বাগানের প্রত্যেকটিতে প্রতি হেক্টর জমিতে ২২/২৫শ’ কেজির উপরে ও নিচে ১৫০/১১৬শ’ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়ে আসছে!
চায়ের ভাল ফলনের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত বৃষ্টি। বৃষ্টির পর রোদ পেলেই চা গাছে কুঁড়ি আসে। এ বছর নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় হবিগঞ্জে চায়ের ফলন ভাল হলেও সময়মত গাছ থেকে এসব কুঁড়ি সংগ্রহ করা হয়নি।
লস্করপুর, সিলেট, জুড়ী, লংলা, মনু-ধলাই, বালিশিরা ও চট্টগ্রামসহ সাতটি ভ্যালির মাধ্যমে দেশের প্রায় ৩৫৮টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮টি বাগানে ফ্যাক্টরি রয়েছে। আর শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ। এর মধ্যে হবিগঞ্জের বাগানগুলোতে চা পাতা উৎপাদনে লক্ষাধিক শ্রমিক জড়িত।
অন্যদিকে, বকেয়া মজুরি ও অন্যান্য সংকটের কারণে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ৫টি বাগান আড়াই মাস এবং দেউন্দি টি কোম্পানির ৪টি বাগান ৩ মাস বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমেছে ২০ লাখ কেজি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মূল উৎপাদন মৌসুমে শ্রমিক অসন্তোষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। অথচ চায়ের উৎপাদন খরচ বাড়লেও নিলামে দাম বাড়েনি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চা শিল্পের এই সংকট কাটাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পুরো খাতই বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে!
অথচ সিলেটের চা বাগান থেকেই চা চাষের গোড়াপত্তন, উৎপাদন শুরু। যা এখন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। এটা রক্ষাা নাহলে অর্থনৈতিক মুক্তি দূরুহ ব্যাপার হয়ে দাড়াবে৷
দ.ক.সিআর.২৫