আসাদ ঠাকুর, অমনিবাস
সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে দৈনন্দিন জীবনের একটি অমীমাংসিত সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন অনেক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। বাংলাদেশের সড়কগুলোতে প্রতিদিন ঘটে চলা দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। গত মাসে সারাদেশে ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭২ জন, যা মোট নিহতের ৩৩ দশমিক ১৪ শতাংশ মোটরসাইকেল।
কারণ সড়ক শৃঙ্খলা না মেনে, অদূরদর্শিতায়, একটু তাড়াহুড়া করতে গিয়ে চলে আসে অপ্রত্যাশিত বিপদ। এমনকি মাত্র একটি মুহূর্তের ভুল সিদ্ধান্ত একজন মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে বা একটি পরিবারের সুখের পরিবেশ বদলে দিতে পারে। এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। ২০২৪ সালে প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। শুধু তা–ই নয়, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা আড়াই গুণ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে মোট মটরযানের ৭১ শতাংশ মটরসাইকেল। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার প্রবণতা প্রবল। এরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং অন্যদেরকে আক্রান্ত করছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি ব্যাপক অংশ ঘটছে বাস এবং পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের ধাক্কা/চাপায়। এসব দ্রুত গতির যানবাহন চালকদের অধিকাংশই অসুস্থ ও অদক্ষ। এদের বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর কারণে দক্ষ মোটরসাইকেল চালকরাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে “সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮” বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা। এছাড়াও গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরি।
দ.ক.সিআর.২৫