- ➖
দিপংকর বণিক
হবিগঞ্জের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী ফসল। ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষানীরা। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। এদিকে ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে কৃষি অফিসার বলেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং কৃষক ন্যায্য মূল্য পেলে আগামীতে বোরো চাষ আরও বাড়বে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৩০ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। যা থেকে ১ লাখ ২৮ হজার ৮৪৯ মে. টন চাউল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের কৃষক কৃষানীরা জানান, অন্য জনের জমি রমজমা নিয়ে চাষাবাদ করে তাদের সংসার চলে। এ বছর অন্য সময়ের তুলনায় উৎপাদন কিছুটা কম। বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কম হয়েছে বলে জানান তারা । গত মৌসুমে প্রতি কেদারে ২০/২২ মণ ধান পেলেও এ বছর প্রতি ১৮/১৯ মণ করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান ওই কৃষকরা। ধানের ন্যায্য মুল্য পাওয়া নিয়েও শংকা প্রকাশ করেন তারা।
উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, জমি চাষ থেকে শুরু করে বীজ বপন, চারা রোপন, বাছাই, সার, কীটনাশক, মাড়াইসহ শ্রমিক খরচ সবকিছুরই দাম বেশী। ধানের ভালো দাম না পেলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
উপজেলার গুনই ইউনিয়নের নাচনি গ্রামের কৃষক বাবুল লস্কর জানিয়েছেন, এ বছর তারা ৪ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। বছরের খোরাক জোগাতে জমির অর্ধেক ধান প্রয়োজন হয়। অবশিষ্ট ধানের ওপর চিকিৎসা, পড়াশোনার খরচসহ সংসারের আনুষঙ্গিক সবকিছু নির্ভরশীল।
এদিকে, বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিআর-২৮ ২৯ নতুন ধান ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা, মোটা সুগন্ধা, হিরা, জনক রাজ ধান ১০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এবার হাওরে ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন এবং লাভবান হবেন।
সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে বোরো ধানের সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষকরাও ফসল ঘরে তুলতে দিন-রাত এক করে কাজ করছে। কাটা, মাড়াই শেষে বস্তাবন্দি ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত কৃষক পরিবারের ছোটবড় প্রত্যেক সদস্য। আগাম বন্যা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
দ.ক.সিআর.২৫