➖
কালনেত্র প্রতিনিধি
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি পড়লো জেলার চা বাগানগুলোতে। এতে বাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা অনেকটাই খুশি হয়েছেন। দু’ এক দিনের মধ্যে আবারও বৃষ্টি দেখা দিলে ভালো ফলনের সম্ভাবনার পাশাপাশি আপাতত বাগান রক্ষায় কৃত্রিম পানি দেওয়া প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বাগান কর্তৃপক্ষ।
চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তা বাড়ছিল চা বাগানের মালিক-শ্রমিকদের। অনেক বাগানের চা পাতা পুড়ে যায়। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলার কয়েকটি চা বাগান ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেল। এতে হাসি ফুটেছে চা বাগান সংশ্লিষ্টদের মুখে। চলতি বছরে (২০২৫ সালে) চায়ের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি।
২০২৩ সালে ১০৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। আর ২০২৪ সালে হয় ৯৩ মিলিয়ন কেজি। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ১০% কম ছিল। দেশে নিবন্ধনকৃত চা বাগান রয়েছে ১৬৮টি। পাশাপাশি পঞ্চগড়ে রয়েছে ক্ষুদ্রায়িত অনেকগুলো চা বাগান। পঞ্চগড় ও দেশের ১৬৮টি চা বাগান মিলিয়ে ২০২৫ এর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি। প্রকৃতি নির্ভর একটি কৃষিজ পণ্য চা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চায়ের উৎপাদনও ভালো হয়। এর জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি ও সূর্য কিরণ।
প্রায় ৪ মাস আগে থেকেই চা বাগানের সেকশনগুলোতে চা গাছ ছাঁটাই করার কাজ শুরু করেছিল বাগান কর্তৃপক্ষ। ছাঁটাইয়ের কারণে চা বাগানে চলে এসেছিল রুক্ষ শুষ্কভাব। চা বাগানের জন্য সহনীয় তাপমাত্রার সীমা পেরিয়ে গেলে বিপত্তিতে পড়েন বাগান-সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির অভাবে রুক্ষ বাগানে নতুন পাতার দেখা যাচ্ছিল না খুব একটা। এর মাঝে বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সামান্য যা কুঁড়ি-পাতা ছিল তাও আক্রান্ত হতে শুরু করে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক দিপন কুমার সিংহ জানান, ‘চায়ের জন্য বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতির পাশাপাশি প্রকৃতির উপরও নির্ভর করতে হয়। চায়ের জন্য মূলত প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো। সকাল, বিকাল ও সন্ধ্যায় এই সময়ে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে চায়ের জন্য বড় উপকার। তাছাড়া বর্ষায় যদি অতি বৃষ্টি হয় তাও চায়ের জন্য ক্ষতিকর। আবার প্রচুর- তাপদাহ হলে তাও ক্ষতিকর। যে কারণে এর জন্য কিছুটা প্রকৃতির উপর তো নির্ভর করতেই হয়।
তিনি আরও বলেন, ৮-১০দিন পর যেসব গাছে নতুন পাতা এসেছে সেই গাছগুলো থেকে পাতা তুলার কাজ শুরু করবো। আবার অনেক গাছ থেকে আরও দেরিতে পাতা তুলতে হবে। তবে খরায় যেসব গাছের পাতা নষ্ট হয়েছে, আশা করছি দ্রুত সময়ের ভিতরে পুষিয়ে নিতে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানীর ডিজিএম শফিকুর রহমান (মুন্না) বলেন, ‘বৃষ্টিতে বাগানগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ভালো ফলনের সম্ভাবনার পাশাপাশি আপাতত বাগানগুলোতে কৃত্রিম পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে অনাবৃষ্টির কারনে ও তীব্র খরায় মৌসুমের শুরুতেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেল, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ চা সংসদ (বিসিএস) সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান জিএম গোলাম মোহাম্মদ শিবলি জানান, ‘দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ও তাপমাত্রা বেশি থাকায় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছগুলো সজীবতা ফিরে পেয়েছে।
দ.ক.সিআর.২৫