➖
কালনেত্র ডেস্ক
২০২৩ সালে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি হয়েছে, ওই বিপুল পরিমাণ ফাঁকি রোধ করতে পারলেও বড় অংকের রাজস্ব আদায় সম্ভব হতো বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে “কর্পোরেট ইনকাম ট্যাক্স রিফর্ম ফর গ্র্যাজুয়েটিং বাংলাদেশ: দ্য জাস্টিস পার্সপেক্টিভ” শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ক্রিশ্চিয়ান এইড ইন বাংলাদেশ ও সিডিডি যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক মো. তামিম আহমেদ।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছি ২০২৩ সালে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি কর ফাঁকি হয়েছে। এনবিআর কী পরিমাণ প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করছে। শুধু যে কর ফাঁকি তা নয়, করজালের বাইরেও অনেক খাত ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদেরকে করজালের মধ্যে আনা যায়নি। এই বিপুল পরিমাণ ফাঁকি রোধ করতে পারলেও আমরা বড় পরিমাণ অর্থ বা রাজস্ব আদায় সম্ভব।
তিনি বলেন, ডিজিটালইজেশন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমরা দেখতে পারছি। ব্যবসায়ী ও এনবিআরে স্বার্থে এটা করা জরুরি। অথচ এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের এক ধরনের অনীহা রয়েছে। বাংলাদেশে যে কোনো লেনদেন একক ডিজিটাল সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যাতে করে যে কোনো লেনদেন ট্রেস ও ট্রাক করা যায়। সেটার আলোকে দাখিলকৃত রিটার্নকে ভেরিফাই করা যায়।
অন্যদিকে এনবিআরকে ৭১ হাজার কোটি টাকা শুধুমাত্র এনবিআরে কর ব্যয় হিসাবে ব্যয় করতে হয়। ওই বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের অ্যাসেসম্যান্ট করা হয় না। কর ব্যয়ের মধ্যে প্রণোদনা রয়েছে। এতো এতো প্রণোদনা কাকে দেওয়া হয়? আমি বলতে চাই বিনিয়োগের জন্য কোনো বিনিয়োগকারীকে প্রণোদনা দেওয়া হয় না। আমরা মনে অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে প্রণোদনা বৃহৎ অংশ তুলে নেওয়া উচিত।
উচ্চ মাত্রার রাজস্ব আয়ের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে মোয়াজ্জেম বলেন, সরকারে যে কোনো ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উচ্চ মাত্রার রাজস্ব আয়ের কোনো বিকল্প নেই। আগামী দিনে উচ্চমাত্রায় রাজস্ব না পেলে ভর্তুকি, দক্ষতা, রপ্তানির বহুধাকরন কিংবা ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কোনো কিছু সরকার বাড়তিভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে না। সেই প্রেক্ষাপটে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া উচিত অভ্যন্তরিণ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি। এর মধ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর হিসাবে কর্পোরেট কর এবং মূসক সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দুই খাত থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ রাজস্ব আসে। এই কারণে কর ন্যায্যতার ভিত্তিতে ওই খাতের সংস্কার করা দরকার।
তিনি বলেন, বাজেট আসলে বিভিন্ন প্রেসার গ্রুপ করহার কমানো জন্য সরকারের ওপর চাপ দিতে থাকে। এর ফলে কর নিয়ে সরকারের প্রকৃত লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়, পরিকল্পনা খোলস আকারে থেকে যায়। যা আসলে ভালো ফল নিয়ে আসে না। সে কারণে আমাদের পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ কর হিসাবে কর্পোরেট কর ও ভ্যাটকে একটি কাঠামোর আলোকে বিবেচনা করা। কর ন্যায্যতাকে বিবেচনায় রাখতে। কর ন্যায্যতার ভিতরে কর হার, কর ভিত্তি, কর ব্যয়, কর ফাঁকি ও কর প্রশাসক। এই পাঁচটি বিষয় কর ন্যায্যতার অংশ।
দ.ক.সিআর.২৫