1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৬ অপরাহ্ন

জীবনে ‘সুখী’ হবেন কীভাবে—

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

কালনেত্র ডেক্স

“কীভাবে নিজেকে সুখী রাখব?”—এই প্রশ্নটাই আসলে আমাদের জীবনের বেশির ভাগ লক্ষ্য আর চেষ্টার মূলে থাকে।

সুখ মানে আমরা বুঝি—ভাল লাগা, শান্তি আর জীবন নিয়ে খুশি থাকা। সুখীনেস কিন্তু চাইলেই বাড়ানো যায়, যদি আপনি নিজে বুঝে শুনে কিছু বদল আনেন।

এটা শুধু লাইফস্টাইলে সুখের উপাদান যোগ করা না। বরং, আপনি যেভাবে ভাবেন সেই অভ্যাসটাও একটু একটু করে পাল্টানো। যাতে আরও ইতিবাচক দৃষ্টিতে জীবনকে দেখতে পারেন।

সুখী হতে চাইলে আগে নিজেকে বুঝতে হবে। এটাও মনে রাখতে হবে যে, সুখ সবার জন্য একইরকম না। যার কাছে যেটা মূল্যবান, সেটাই তাকে সুখ এনে দিতে পারে।
.

আপনি কীসে সুখী হন, সেটা খুঁজে বের করুন

নিজেকে সুখী করার প্রথম ধাপ হল—আপনার জন্য কোন জিনিসটা আসলেই আনন্দ আর শান্তি নিয়ে আসে, সেটা বোঝা। সমাজে প্রচলিত বা জনপ্রিয় ধারণাগুলি হয়ত আপনাকে সেটা নাও দিতে পারে।

অনেক সময় আমরা ভাবি, একটা পারফেক্ট রিলেশনশিপ, সুন্দর একটা বাড়ি বা অন্যের প্রশংসা পেলে আমরা সুখী হব।

এই জিনিসগুলি মাঝে মাঝে সত্যিই আনন্দ দেয়। আবার অনেক সময় এগুলি না পেলে মন খারাপ হয়। আবার কখনও এগুলি পাওয়ার পরেও দেখা যায়, মন ভরছে না।

আরেকটি সমস্যা হয়, যখন আমরা একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক গুরুত্ব দেই। সেটা করতে গিয়ে জীবনের অন্য অনেক ব্যাপারে আর সময় দেই না, যেসব বিষয় আমাদেরকে ভালো রাখতে পারত।
.

সুখ বাড়ায় এমন কিছু জিনিস। যেমন:

• অর্থনৈতিক অবস্থা

• বন্ধু বা সোশ্যাল কানেকশন

• স্বাস্থ্য

• বাড়ির পরিবেশ

• এলাকা বা কমিউনিটি

• সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া

• জীবনের অর্থ, বা লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া

এগুলির কমতি থাকলে যে আপনি অসুখী হবেন, তা কিন্তু না। আবার, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও যে আপনি একেবারে সুখী হবেন তাও বলা যাচ্ছে না। তবে যদি এই ব্যাপারগুলি মোটামুটি ঠিক থাকলে আপনি অনেকটা “ভাল” ফিল করবেন।

তাই এই দিকটায় একটু মনোযোগ দিন, একটু একটু করে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শুরুটা ছোট পদক্ষেপ দিয়ে শুরু হলেও।

ভাল হেলথ ডিসিশন নেওয়া, যে সব বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে সেগুলিতে যুক্ত হওয়া, আর আশেপাশে একটা সাপোর্টিভ নেটওয়ার্ক তৈরি করা—এগুলিও অনেক সাহায্য করে।
.

আপনার মনোভাব কেমন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ

আপনি প্রতিদিনের ঘটনা আর পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছেন সেটাও আপনার সুখে থাকার ওপর বিশাল প্রভাব ফেলে।

এটা আমরা সবাই জানি যে, জীবনের প্রতি তুলনামূলকভাবে বেশি ইতিবাচক মানুষেরা সাধারণত একটু বেশি সুখী হন। ইতিবাচক হওয়া মানে সবসময় হাসি মুখে থাকা নয়। ইতিবাচক মানুষদের মধ্যে আসলে তাদের মনোভাবের কারণেই সাফল্য, উন্নত স্বাস্থ্য আর মানসিক শান্তি বেশি দেখা যায়।

আপনি যদি ইতিবাচক থাকার মাইন্ডসেট তৈরি করতে পারেন, তাহলে শুধু এখনকার বাস্তবতাতেই সুখী হবেন না, ভবিষ্যতেও সুখী হওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারবেন।

এছাড়াও, যারা বিশ্বাস করেন যে নিজের লাইফের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে (পরিস্থিতির শিকার না হয়ে নিজের সিদ্ধান্তে চলা), তারাও সাধারণত বেশি সুখী থাকেন।

আপনি যখন লাইফের স্ট্রেস বা সমস্যাগুলিকে ‘হুমকি’ হিসেবে না দেখে “চ্যালেঞ্জ” হিসেবে দেখেন, তখন আরও ভাল সমাধান খুঁজে পাবেন।
.

ব্যালেন্স আনা জরুরি

অনেকেই এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করেন যেগুলি দেখে মনে হয় তা সুখ বয়ে আনবে। কিন্তু সবসময় সেই ফলাফল থেকে সুখ আসে না। আমরা এমন মানুষদের চিনি যারা ক্যারিয়ারে সবটুকু ঢেলে দিয়েছেন কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে কখনোই মনোযোগ দিচ্ছেন না। তখন হয়তো প্রশ্ন আসে, “সাকসেসফুল তো হলাম, কিন্তু আমি তো সুখী না!”

তাই বোঝা দরকার যে লক্ষ্যের পেছনে ছুটছেন, সেটা আপনার সুখের অন্য ক্ষেত্রগুলিকে প্রভাবিত করছে কিনা।

সুখী হতে চাইলে সম্পূর্ণ জীবনের প্রতিটি দিকেই মনোযোগ দিন। ভাল চাকরি বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়েও সময় ও মনোযোগ দিন।

আর সুখের কোনো শর্টকাট নেই। এটা অনেক কিছুর মধ্যে ভারসাম্য রাখার একটা টেকনিক। তাই জীবনের সব শক্তি এক দিকে ঢেলে দেবেন না। গোল সেট করুন, আর ভাবুন জীবন দেখতে কেমন হোক আপনি চান? অথবা, প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট দিক নিয়ে নতুন হ্যাবিট তৈরি করুন।
.

লক্ষ্য ঠিক করুন

নিউ ইয়ার রেজোলিউশন হোক, বা জীবনে একটু ভালো করার চেষ্টা—আমরা অনেকেই শুরুতে এত বেশি আশা করে থাকি যে, শেষমেশ হতাশ হই লক্ষ্য পূরণ না করতে পারলে।

ধরুন, আপনি হঠাৎ করে নতুন কোনো অভ্যাস পুরোপুরি বদলাতে করতে চাইছেন। যখন সেটা একবারে হয় না, তখন নিজের ওপরই রাগ হয়, হতাশা আসে—আর আপনি পুরো লক্ষ্যটাই বাদ দিয়ে দেন।

তাই নিজের জন্য যা করতে হবে:

• প্রথমে ছোট ছোট, বাস্তবসম্মত লক্ষ্য গোল নির্ধারণ করুন। ছোট ছোট ধাপে আগালে কিছুদূর পরপরই কোনো না কোনো সাফল্য অনুভব করবেন।

• পরবর্তী ধাপ—নিজের উন্নতিকে স্বীকৃতি দিন। প্রতিটা ছোট সাফল্যে নিজেকে বাহবা দিন। চাইলে ছোট উপহারও দিতে পারেন নিজেকে।

• আর অবশ্যই, পাশে এমন কিছু মানুষকে সবসময় রাখুন যারা আপনাকে কিছু উৎসাহ দেবে। তাদের বলুন আপনি কী করতে চাইছেন, আর আপনার উন্নতি কেমন হচ্ছে। এতে আপনি নিজেও অনুপ্রেরণা পাবেন, আর হাল ছেড়ে দেয়ার করার ইচ্ছাটাও কমে যাবে।

সুখী হওয়াটাও অন্য সবকিছুর মত একটা প্রক্রিয়া। নিজেকে সময় দিন, আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসবে।
.

প্রতিদিনের যেসব ছোট অভ্যাস আপনাকে সুখী করতে পারে:

দীর্ঘ মেয়াদে সুখী থাকার চেষ্টা জরুরি, তবে এমন কিছু ছোট কাজও আছে যা আপনাকে এই মুহূর্তেই ভালো অনুভব করাবে।

• গ্র্যাটিটিউড জার্নাল রাখুন: প্রতিদিন যে জিনিসগুলির জন্য আপনি কৃতজ্ঞ, সেগুলি লিখে রাখুন। গবেষণায় দেখা গেছে, এর মাধ্যমে ইতিবাচক অনুভূতি বৃদ্ধি পায়, জীবনের সন্তুষ্টিও বাড়ে।

• হাঁটুন: হাঁটা শুধু শরীরের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল। হাঁটা, বিশেষ করে বাইরের আলো আর প্রকৃতি, মন ভালো করতে সাহায্য করে।

• নিজেকে বিস্মিত হওয়ার সুযোগ দিন: যারা নিয়মিত অবাক হওয়ার মত অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যায় (যেমন দারুণ কিছু দেখে ‘ওয়াও’ অনুভব করা), তারা সাধারণত কম স্ট্রেসে থাকেন আর জীবনে অধিক সন্তুষ্ট থাকেন। এই অনুভূতি বাড়াতে চারপাশের পৃথিবী সম্পর্কে আগ্রহী হতে পারে, নতুন কিছু শিখতে পারেন, বা এই মুহূর্তের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন।
.

যদি মন খারাপ সহজে না কাাটে

যদি অনেক চেষ্টা করেও সুখ খুঁজে না পান, আর মন খারাপ থেকে যায়—তাহলে একজন ডাক্তার বা মেন্টাল হেলথ স্পেশালিস্টের সাথে কথা বলুন। দীর্ঘ সময় ধরে মন খারাপ থাকা বা অসুখী বোধ করার কারণ ডিপ্রেশনের মত ক্লিনিকাল কিছুও হতে পারে। এই অবস্থায় কোনো স্পেশালিস্টের সাহায্য নিতে একদম দ্বিধা করবেন না।
.

সুখ খুঁজে পাওয়া আসলে একদিনের কাজ না। এটা তৈরি হয় প্রতিদিনের যত্নে, ছোট ছোট সিদ্ধান্তে। আর নিজের প্রতি আরেকটু বেশি সদয় হওয়ার মাধ্যমে।

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট