উজ্জ্বল মুহম্মদ◾
কবি মুহম্মদ আবুল বশীর বাঙ্গালকে ধরা হয় হবিগঞ্জ জেলায় এই সময়ের প্রধানতম কবি। তিন দশক ধরে আপন মননে লিখে যাচ্ছেন বিরামহীন। রচনা করেছেন ‘কিশোরীর মুখ’, ‘রূপসী বাংলা ও আজকের ছবি’, ও ‘আলোর পথে’ নামের অসম্ভব জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ।
কবি মুহম্মদ আবুল বশীর বাঙ্গালের ‘কিশোরীর মুখ’ পাঠক মহলে ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। সেখানে কবি বলেছিলেন-
“কোনদিন তুমি প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি হবে
শের কিংবা মণ ধরে…”
কবি কাশ্মীর নিয়ে লিখলেন-
“দুইশ বছরের গোলামীর জিঞ্জির চিহ্ন করে
ষাট বছরের কারাগারে আঘাত হেনে
ষাট লাখ মানুষের গণকবরে
আজিকে জ্বলছে আজাদীর লেলিহান শিখা…”
এক দীর্ঘ কবিতায় কাশ্মীরের জনগণেরই যেনো কথা বলে গেলেন কবি। বরাবরই তাঁর লিখায় উঠে এসেছে সময়, সমাজ, জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতির অপূর্ব চিত্রমালা।
কবি ১৯৫০ সালের ৫ মার্চ মোতাবেক ২১ শে ফাল্গুন ১৩৫৭ বাংলায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রাণীরকোর্ট (কিরতাই) গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা মরহুম পণ্ডিত আব্দস ছাত্তার ও মা আলহাজ্ব আজমনা বানু। তিন ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে কবি সর্ব কনিষ্ঠ। বিশ্বনন্দিত প্রকৌশলবিদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর ড. এম এ রশীদ কবি পরিবারের কীর্তিমান পুরুষ।
কবি মুহম্মদ আবুল বশীর বাঙ্গাল দীর্ঘদিন রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং ২০০৯ সালে শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর গ্রহন করেন।
কবি প্রকৃতির এক ঘনিষ্ঠ বান্ধব। তিনি সবুজ সামাজিক বনায়নে রেখেছেন অগ্র ভূমিকা। তিনি রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বিভিন্ন রাস্তার দুপাশে অনেক বৃক্ষ রোপন করেন। যে বৃক্ষগুলো প্রকৃতি ও মানুষের কল্যাণে নিজের অস্তিত্ব প্রকাশ করছে স্বগৌরবে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা।
বর্তমানে কবি মুহম্মদ আবুল বশীর বাঙ্গাল রাজার বাজার খোয়াই সাহিত্য সংসদ ও চুনারুঘাট কবি পরিষদের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এবং নিরলশভাবে ধর্মীয় উপাসনা ও সাহিত্যচর্চা করছেন নিজের প্রতিষ্ঠিত রানীরকোট কিরতাই গ্রামের নিজ নিবাস বঙ্গ নিকেতনে। হবিগঞ্জের গৌরব প্রচারবিমুখ এ কবি সবসময় নিজেকে আড়ালে রেখেছেন বলেই তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। তবে সময়ের প্রয়োজনে কবি আবুল বশীর বাঙ্গালকে পাঠ করা অতীব জরুরী।
দ.ক.সিআর-২৪