আসাদ ঠাকুর◾
সমাজে অধিকাংশ মানুষ আছেন যারা মনে করেন ধর্ম মানুষের জন্য আলাদা আলাদা হয়। যেমন মনে করেন— ইসলাসম একটি ধর্ম, খ্রীষ্টান একটি ধর্ম, বৌদ্ধ একটি ধর্ম। অথচ এগুলো ব্যক্তি বিশেষের তৈরী করা মতবাদ বা পন্থা।
আসলে ধর্ম স্রষ্টার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়, কোনো ব্যক্তি বিশেষের দ্বারা নয়। যেমন— আগুনের ধর্ম তাপ প্রদান করা, বরফের ধর্ম শৈত্য প্রদান করা। অনুরূপ ভাবে মানুষমাত্রেই ধর্ম হল “মানবতা”। পরমেশ্বর সৃষ্টির আদিতেই মানুষকে “মানবতা” ধারণ করার জ্ঞান দিয়ে পাঠিয়েছেন। এই বেদ অনুসারে কর্ম করাই ধর্ম। তাই মানবতাকে ধারণ করা সকল মানুষের ধর্ম।
ধর্মীয় বিশ্বাস মতে হিন্দুগণ জন্মসূত্রে হিন্দু। কেবল ধর্মকর্ম পালনের উপর হিন্দুদের ধর্ম নির্ভর করে না। তাই তাদের হিন্দুত্ব কেউ হরণ করতে পারে না। প্রকৃতিই তাদের ঈশ্বর এবং প্রার্থনার ক্ষেত্র। তাই তাদের সংস্কৃতি ও ধর্ম অভিন্ন। প্রত্যেক হিন্দুর একজন করে দেবতা থাকলেও কেউ কারো প্রতি কটাক্ষ করে না। এজন্য ভারতে বিশ লাখ দেবতা পূজিত হলেও এক দেবতার অনুসারী অন্য দেবতার অনুসারীগণের প্রতি কখনো সামান্য বিদ্বেষও পোষণ করে না। তারা ধর্মীয় নির্দেশনাকেও প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করে আধুনিকতার সঙ্গে সহজে অভিযোজিত হতে পারে।
ধর্মীয় বিশ্বাস মতে খ্রিষ্টানগণ তাদের মহান সৃষ্টিকর্তা গড-এর পুত্র যিশুখ্রিষ্টের অনুসারী। তাদের পারস্পরিক আচরণ, ব্যবহার ও দেনা-পাওনা রক্তসম্পর্কের মতো নিবিড় এবং আত্মপ্রণোদনামূলক। তাই তাদের কারো গোলামিতে আবদ্ধ থাকতে হয় না, আত্মচিন্তা এবং সৃজনশীল ধারণা প্রকাশের সুযোগ আছে। ঈশ্বর তাঁদের পিতা বলে তাঁরা তাঁর কাছ থেকে পিতৃস্নেহ পেয়ে থাকেন।
ধর্মীয় বিশ্বাস মতে মুসলমানগণ তাদের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ পালন এবং তাঁর গোলামি করার জন্যই তাঁদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই আল্লাহর গোলামি করাই তাঁদের একমাত্র কাজ। আত্মচিন্তা, সৃজনশীল উৎকর্ষ বা আত্মধারণা প্রকাশের কোনো সুযোগ তাদের নেই। আল্লাহই তাদের সবকিছু নির্ধারণ করে দিয়ে থাকেন। তাই তাদের সৃজনশীলতা ও আধুনিকতার সঙ্গে অভিযোজিত হওয়া সম্ভব নয়। এজন্য তাদের সহস্রাধিক মতবাদ এবং এক মতবাদ আর এক মতবাদকে কাফের গণ্যে বাতিল করে দেয়।
তবে ধর্মালয়ে মুসলমানদের গমন বিশেষ পর্বে, বিশেষ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং ধর্ম সম্পর্কে ইমাম বেশি জানবেন, ইমাম জনলেই চলবে “আমরা তো আর হুজুর না” এরকমই হলো বেশির ভাগ মুসলমানের মনের অবস্থা!
সমাজে অধিকাংশ মানুষ আছেন যারা মনে করেন ধর্ম মানুষের জন্য আলাদা আলাদা হয়। যেমন মনে করেন— ইসলাম একটি ধর্ম, খ্রীষ্টান একটি ধর্ম, বৌদ্ধ একটি ধর্ম। অথচ এগুলো একেকটি ব্যক্তি বিশেষের তৈরী করা মতবাদ বা পন্থা।
মুলতঃ ধর্ম স্রষ্টার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়, কোনো ব্যক্তি বিশেষের দ্বারা নয়। যেমন— আগুনের ধর্ম তাপ প্রদান করা, বরফের ধর্ম শৈত্য প্রদান করা। অনুরূপ ভাবে মানুষমাত্রেই ধর্ম হল “মানবতা”। পরমেশ্বর সৃষ্টির আদিতেই মানুষকে “মানবতা” ধারণ করার জ্ঞান দিয়ে পাঠিয়েছেন। এই বেদ অনুসারে কর্ম করাই ধর্ম। তাই মানবতাকে ধারণ করা সকল মানুষের ধর্ম।
তবে ধর্ম কোনো অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কার নয়। ধর্ম হল মনুষ্য জাতির গুনগত কিছু বৈশিষ্ট, যা ধারণ করেই ধার্মিক হতে হয়।
আসাদ ঠাকুর
কবি, লেখক ও সাংবাদিক
দ.ক.ধর্ম