➖
টানা ১৫ বছরের দুঃশাসন, ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া, গুম, খু*ন, অপহরণের রামরাজত্ব কায়েম। বিরোধী মতের বিরুদ্ধে সীমাহীন অত্যাচার, বাক স্বাধীনতা হরণ। মানুষের টুঁটি চেপে ধরতে ডিজিটাল কালো আইন তৈরি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাস্তানির লাইসেন্স ধরিয়ে দেয়াসহ দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, এবং একদলীয় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের পরেও শেখ হাাসিনা নিষ্পাপ! কারণ এগুলো সে নিজ হাতে করেনি।
এগুলো করেছে তার চারপাশের নেতাকর্মীরা! এমন বয়ানই হাটে, মাঠে, ঘাটে, পাড়ার চায়ের টেবিলে ফ্যাসিবাদী কর্মীদের একমাত্র বয়ান! তারা বিশ্বাস করে শেখ হাসিনা কোনো দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় বরং অন্যান্য নেতারাই তাকে বিপদে ফেলেছে। এই বয়ান যে শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদের কর্মীদের তা কিন্তু নয়; অনেক সুশীল, লেখাপড়া জানা ফ্যাসিবাদ সমর্থনকারীদেরও বয়ান এটাই!
মূলত এই সুশীল গোষ্ঠীটির সমর্থনই শেখ হাসিনার দুঃশাসনকে দীর্ঘায়িত করেছিলো। কাজেই ফ্যাসিবাদ পরবর্তী বাংলাদেশে এসব মৌন সমর্থনকারীদের সাধারণ চোখে দেখলে চলবে না। এদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। এরা চায় ফ্যাসিবাদ আবারও ফিরে আসুক। ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনতে তারা প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করতেও দ্বিধা করবে না। এরা সব দোষ স্বীকার করেও ঘুরেফিরে শেখ হাসিনার পবিত্রতা ঘোষণা করবে।
মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা নির্দোষ বাকীসব দোষী এই বয়ান শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদের পক্ষের বয়ান। তারা জেনেশুনেই এই বয়ান পেশ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। অথবা দলীয় অন্ধত্বের মধ্যে পড়ে এই বয়ানকে বিশ্বাস করে। এদেশের মুক্তিকামী লড়াকু মানসিকতার মানুষমাত্রই শেখ হাসিনাকে খুনি বলে মনে করে। তার বিচার চায়।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহ*ত্যার বিচার করা না হলে ফ্যাসিবাদী এই বয়ান একসময় ন্যায্যতা লাভ করবে। কয়েকজন রাঘববোয়াল আর সাধারণ নেতাকর্মীদের শাস্তি দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিচার পূর্ণতা পাবে না। শেখ হাসিনার বিচার দ্রুত শুরু করতে হবে, না হলে সে দুধে ধুয়া তুলসি পাতাই থেকে যাবে।
লেখক: মোহাম্মদ সুমন, গণমাধ্যমকর্মী ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার
দ.ক.বিবৃতি