1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জের মাঠে মাঠে সোনারঙা ধানের ছড়াছড়ি- কালনেত্র 

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

কালনেত্র প্রতিবেদক◾

সারাদেশে চলছে আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ধানের সোঁদা গন্ধে ভরে ওঠেছে আবহমান বাংলা। পাকা ধানের ম-ম ঘ্রাণে মাতোয়ারা কৃষক। মাঠে মাঠে সোনারঙা ধানের ছড়াছড়ি। কৃষকের ঘরে গড়াগড়ি খাচ্ছে সোনালি ধান। দিগন্তজোড়া প্রকৃতি ছেয়ে গেছে হলুদ রঙে। ধান গোলায় তোলার ধুম পড়েছে কৃষকের ঘরে ঘরে। প্রচন্ড রোদ- তাপের মধ্যেই জমি থেকে ঘাম ঝরানো ফসল ঘরে তুলতে কৃষকের ক্লান্তি নেই।

 

এ বছর বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে বেশ খুশি কৃষকরা। রোদের দিনগুলোতে শুকনো ধান ঘরে তুলতে পারছেন বলে খুশি কৃষাণিীাও। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। উৎসাহ আর উদ্দীপনায় চলছে কৃষকের কাস্তে। টানা তিন বছর লোকসান গোনার পর হিসাব কষে এবার লাভের কথাই বলছেন কৃষক। এরই মধ্যে অনেক এলাকায় কৃষকের গোলায় উঠেছে মৌসুমের নতুন ধান। হাটগুলোতে বেড়েছে নতুন ধানের সরবরাহ। ভালো দামে ধান বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। আগাম জাতের ধান আবাদ করে একই জমিতে আগাম জাতের আলু ও মৌসুমি রবিশস্য আবাদের জন্য জমি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কৃষক। সূর্য ওঠার আগেই কাস্তে হাতে মাঠে ছুটছেন কৃষক। সারা দেশে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। ধান মাড়াই, বাছাই আর বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণি।

 

এছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, বরেন্দ্র অঞ্চল, মাগুরা, দিনাজপুর ও নওগাঁ এলাকায় আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। বরেন্দ্র অঞ্চল ও ময়মনসিংহের পাহাড়ি এলাকায় ধান কাটা ও মাড়ানোর মিছিলে যোগ দিয়েছেন নারী কৃষি শ্রমিকরাও। একদিকে ধান কাটা হচ্ছে, অপর দিকে সেই ধান মাড়াই করা হচ্ছে। রাস্তায় ধান মাড়াই ও শুকানো হচ্ছে।

 

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমন ধান কাটা শুরু হলেও চালের বাজারে প্রভাব পড়েনি। বরং এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে। বাজারভেদে চিকন জাতের ধানি গোল্ড ধান মানভেদে ১৩৫০ থেকে ১৩৮০ টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের স্বর্ণা, পাইজাম ধান ১১শ’ টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। মোটা আমন ধান ১০৫০ থেকে ১০৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশানুরূপ ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। হাটে ধানের দামও মিলছে ভালো, ধানের ভালো দামে কৃষক খুশি। কৃষকের বাড়ির উঠানে এখন শুধু ধান আর ধান। কৃষকরা বলছেন ধানের এই ভালো দাম অব্যাহত থাকলে তারা লাভবান হবেন।

 

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. সুবাস মন্ডল বলেন, এরমধ্যে বুধবার সরকার চলতি আমন মৌসুমে ১০ লাখ টন ধান ও চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। এতে বাজার আরও চাঙা হতে পারে। বাড়তে পারে ধানের দাম। সরকার ৩৩ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে। এ হিসেবে প্রতিমণ ধানের দাম দাঁড়ায় ১৩২০ টাকা (৪০ কেজিতে মণ ধরে)। সরকার এই দাম ধরায় বেসরকারি চালকল ও অন্যদের এ চেয়ে বেশি দামেই বাজার থেকে ধান কিনতে হবে। মৌসুমের শুরুতেই অন্তর্বর্তী সরকার আমন ধানের আগাম মূল্য ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। নতুন ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষক দারুণ খুশি। গ্রামে গ্রামে তাই নবান্নের আনন্দ বইছে। কৃষি শ্রমিকদেরও পোয়াবারো অবস্থা। খাবারসহ হাজার টাকার মজুরি পাচ্ছেন প্রতিদিন। এতে কৃষিভিত্তিক শ্রমও বাজার চাঙ্গাভাব চলছে। আমন ধানকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব সৃষ্টি হয়েছে। দেশে উৎপাদিত ধানের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে আমন থেকে। বাকি ৬০ শতাংশ মেটায় বোরো ও আউশ ধান।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। সারাদেশে কৃষকরা হাসি-গানে আনন্দমনে সোনালি ধান কাটছেন। কেউ আটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে, কেউবা ভ্যানে, আবার কেউ ট্রলি গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। বাড়িতে ধান মাড়াই ও পরিষ্কার করে ধান সেদ্ধ করে শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণিরা।

 

এদিকে এবার ধানের খড়ের দামও অনেক বেশি। তাই বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। আমন রোপণের সময় বৃষ্টি না হলেও শেষ দিকে অতিবৃষ্টি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় অনেক সহজে নতুন ধান ঘরে তুলতে পারছেন বলে জানান কৃষক।

 

এদিকে হবিগঞ্জের বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা। ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। ধানের ভালো ফলন ও দাম পেয়ে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। চিকন ধান ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। এ দাম থাকলে কৃষক লাভবান হবে। আগাম জাতের আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে খুশি ফুটেছে কৃষকের মুখে। মানভেদে প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। ধান তোলা শেষ হলে একই জমিতে আগাম জাতের আলু-ভুট্টা আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

 

কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ আউশ ধান উৎপাদন হচ্ছে বানিয়াচংয়ে। মৌসুমজুড়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষক।  অত্র উপজেলার কৃষক সাইফুলস্না রাকিব বলেন, ১২ কাঠা জমিতে এবারে ধান চাষ করেছেন তিনি। যাতে কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরিসহ সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এবারে ফলন ভালো হওয়ায় সেই ফসল ২০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, এবার বিআর-২৬, ব্রি-২৮, ৪৮, ৫০, স্বর্ণ, শুভলতা, গণতারা, জিএস ওয়ান, জামাইবাবুসহ বিভিন্ন ধানের চাষ হয়েছে।

 

দুর্গাপুরের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক আবু সামা জানান, এবার ধানের দাম ভালো, তবে পুরোদামে ধান বাজারে আসলে হয়তো দাম পড়ে যেতে পারে। তাই সরকারের আর্মি নামাতে হবে ধানের বাজারে।

 

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকার কৃষক রফিক মিয়া বলেন, অনেক বছর পর আমনের ভালো দাম পেয়েছি। সরকারের দামে ধান বিক্রি করতে টোকেন খুঁজতাছি।

 

দ.ক.সিআর.২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট