➖
মাধবপুর প্রতিনিধি◾
সকাল থেকে সবকিছু গুছিয়ে শীতকে উপেক্ষা করে সবুজ চা বাগানে কাজের মধ্যে যোগ দিয়েছেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ২টি চা বাগান সহ ১২টি বাগানের প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। তিন মাস ধরে বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক পরিবারে তীব্র অভাব দেখা দেয়। তহবিল সংকটে গত তিন মাস ধরে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিলনা। পরে এনটিসি সদর দপ্তর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ অনুমোদন করে গত সোমবার শ্রমিকদের দু সপ্তাহের হাজিরা পরিশোধ করেছে। টাকা পেয়ে শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকাল থেকে সবুজ চা বাগানের কাজে ছড়িয়ে পড়েছেন।
সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে এনটিসির ১২ টি চা বাগানে ১৫ হাজার নিয়িমিত শ্রমিক রয়েছে। ১৯৭৮ সালে ১২টি বাগান নিয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানি গঠিত হওয়ার পর একযুগে দীর্ঘ তিন মাস চা বাগান বন্ধ হয়নি।
গত ২০১০ সালে থেকে এনটিসি চা বাগানে লোকসান হচ্ছিল। চায়ের উৎপাদন খরছ বাড়ায় নিলামে চায়ের ভাল দর মিলছিলনা।
এনটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শেখ কবিরসহ অনেক পরিচালক পদত্যাগ করেন। এরপর এনটিসির ১২টি বাগানে তহবিল সংকট দেখা দেয়। টাকার অভাবে শ্রমিকের বেতন সহ যাবতীয় ব্যয় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গত সেপ্টেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাগান বন্ধ থাকে। অবশেষে সদর দপ্তর ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ করে শ্রমিক ও কর্মচারীদের দেনা পরিশোধ করেছে।
গত তিন মাস বাগানে কাজ না হওয়ায় ১৫ লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদন করা যায়নি। বাগান খোলার পরও বাগান নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে চিন্তা দূর হয়নি। এ নিয়ে শ্রমিকদের ভাষ্য হচ্ছে শ্রমিক বাগানে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। তাদের মুজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা খুব বেশি নয়। এরপরও তারা চান বাগান যেন চালু থাকে। কিন্তু কোম্পানি বছর বছর লেকসান করলে ফের বড় সমস্যায় পড়তে পারে। অতএব আগ থেকে বাগান উন্নয়নে চিন্তা করলে বাগান বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রামভজন বলেন, এনটিসিসহ দেশের সবকটি বাগানে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বাগান ও শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে মালিকসহ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
এনটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, এনটিসি’র সুদিন ফিরিয়ে আনতে নানামুখী চিন্তা করছি। আশাকরি শ্রমিক কর্মচারী ও সরকারের সহযোগিতায় এনটিসি আবার লাভের মুখ দেখবে।
দ.ক.সিআর.২৪