➖
কালনেত্র প্রতিবেন◾
গোটা দেশ জুড়ে মাদক ভয়ঙ্কর থাবা বিস্তার করেছে। শুধু শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রামেও অবাধে চলছে মাদক ব্যবসা। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সব ধরনের মাদক। ফোন করলেই বাসায় চলে আসছে এসব মরণ নেশা। মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে প্রসারও। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে মাদকদ্রব্য।
নিষিদ্ধ জগতে অস্ত্রের পর মাদকই এখন সবচেয়ে লাভবান ব্যবসা। বিশেষ করে ফেনসিডিল ও ইয়াবা সহজলভ্য এবং বহনযোগ্য বলে এর বিস্তার দেশজুড়ে। সত্যি বলতে কি দেশের এমন কোনো এলাকা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মাদকের থাবা নেই। দেশজুড়ে এক বিশাল জাল বিস্তার করে আছে এই মরণ নেশার ভয়াবহ সিন্ডিকেট। আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্র মাফিয়াদের সঙ্গে রয়েছে এদের শক্ত ও গভীর যোগাযোগ। সম্প্রতি ইয়াবার যেসব চালান ধরা পড়েছে সেখানেও দেখা যায় মিয়ানমারের নাগরিকরা জড়িত। টেকনাফ হয়ে মিয়ানমার থেকে বেশিরভাগ মাদক আমাদের দেশে আসে। এছাড়াও রয়েছে মাদকের বিভিন্ন রুট। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর, সীমান্ত এলাকায় মাদকের ছড়াছড়ি। এর কিছু ধরা পড়ে। বাকিটা চলে যায় মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে।
মাদকের ভয়াল থাবায় জরাজীর্ণ দেশের সোনালি এক প্রজন্ম। যে প্রজন্মের সময় কাটতো বিদ্যালয়ের বারান্দায়, বন্ধুদের আড্ডায় থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ খেলার মাঠে। যারা বড় হয়ে উপহার দিতো এক সোনালি বাংলাদেশ। অথচ, স্বপ্নের মতো সেই প্রজন্ম আজ মাদকের ভয়াল থাবায় নাস্তানাবুদ! ভয়াল এই থাবা প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যৎ যেমন করছে অনিশ্চিত, ঠিক তেমনি ধুঁকে ধুঁকে ছিন্ন করছে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য।
মাদকাশক্তি আধুনিক সভ্যতার বিপজ্জনক রোগ। এইডস, ক্যান্সারের মতো মাদকাশক্তি ও ভয়াবহ রোগ। বর্তমান বিশ্বে পারমানবিক মারণাস্ত্রের চেয়েও ভয়ংক রূপ নিয়েছে মাদকাসক্তি। যা প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের জাতির ভবিষ্যত যুব সমাজকে। অকালে ঝড়ে যাচ্ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। মাদকের কারণে দাম্পত্য জীবনে কলহের জেরধরে ভেঙ্গে যাচ্ছে অসংখ্য সুখের সংসার। এটি আজ প্রমাণিত সত্য যে, মাদক সব অপকর্ম ও অশ্লীলতার মূল।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাদকের সাথে অপরাধ ও অপরাধীদের একটি ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। মাদক ক্রয়ের জন্য মাদকাসক্তরা যে কোনো ঘৃণিত কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ক্ষুদ্র অপরাধ থেকে শুরু করে বড় বড় ক্রাইম পর্যন্ত করে ফেলে। ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, লুণ্ঠন, রাহাজানি, ধর্ষণ, হত্যা, পতিতাবৃত্তি, অপরহরণ ও মুক্তিপণ আদায় সহ চাঁদাবাজি ইত্যাদি জগণ্য অপকর্ম সংঘটিত হচ্ছে মাদকের দ্বারা।
এমনও দেখা গেছে পরিবারের একজন মাদক সেবনের কারণে পুরো পরিবারটাই ধ্বংস হয়ে গেছে।
দ.ক.সিআর.২৫