1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয় || ধর্ম

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

সালাউদ্দিন শুভ◾

শবে বরাত ফারসি শব্দ। ‘শব’ অর্থ রাত। আর ‘বরাত’শব্দের অর্থ ভাগ্য। আরবিতে একে বলে লাইলাতুল বরাত, যার অর্থ ভাগ্য রজনী। এ রাতে আল্লাহ তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, মহান আল্লাহ এ রাতে মুশরিক বা আল্লাহর সঙ্গে শিরককারী এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত হবে শবে বরাত।

মুমিন মুসলমান এ রাতটিকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে ইবাদত-বন্দেগি, তওবা-ইসতেগফার ও দোয়া-দরুদে অতিবাহিত করে থাকে। যদিও এ রাতে সম্মিলিতভাবে ইবাদত সম্পর্কে হাদিসে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই।

রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে অধিক পরিমাণে ইবাদত করতেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু আমল দ্বারা বিশেষ কিছু ইবাদত প্রমাণিত হয় যা তিনি করেছেন।

এ রাতের কিছু আমল
এ রাতে দীর্ঘ তেলাওয়াতে নফল নামাজ পড়া। অর্ধ শাবানের রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক পরিমাণে দীর্ঘ নফল নামাজ পড়তেন।

হাদিসে এসেছে-হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুম থেকে ওঠে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সেই নামাজে এতো দীর্ঘ সময় তিনি সেজদায় ছিলেন যে, আমার সন্দেহ হচ্ছিল তিনি ইন্তেকাল করেছেন কিনা। আমি উঠে গিয়ে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। আঙুলটি নড়ে উঠল। আমি নিশ্চিত হলাম যে তিনি বেঁচে আছেন। এরপর আমি আপন স্থানে ফিরে এলাম।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদা থেকে মাথা উঠালেন এবং নামাজ শেষ করে এক পর্যায়ে বললেন- হে আয়েশা! তুমি কি ভেবেছ যে, আল্লাহর নবী তোমার ওপর কোনো অবিচার করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এমন কিছুই ভাবিনি।

আমি বরং আপনাকে দীর্ঘ সময় সেজদায় দেখে ভয় পাচ্ছিলাম যে, আপনাকে আল্লাহ পাক উঠিয়ে নিলেন কিনা! অতপর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কি জান আজকের এ রাতটি কোন রাত?

আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ রাতটি শাবানের পঞ্চদশ রজনী। এতে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেন। ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করে দেন। রহমতপ্রার্থীদের রহমত দান করেন। অপরদিকে পরশ্রীকাতর ব্যক্তিদের আপন অবস্থায় ছেড়ে দেন।’ (শুয়াবুল ঈমান, আত তারগীব)

মধ্য শাবানের রাতের দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। তাই বেশি বেশি দোয়া করা। হাদিসে এসেছে-হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেয়া হয় না।

শবে বরাতে করণীয়
আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদেশ্যে এ রাতের করণীয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া, দিনে রোজা রাখা, বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা। এ রাতে পাঠ করার মতো অসাধারণ একটি দোয়া রয়েছে।

আল্লাহম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি। অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা পছন্দ করো, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।

শবে বরাতে বর্জনীয়
শবে বরাত পুণ্যময় রজনী। এ রাতে কোনো নোংরা ও গর্হিত কাজ করা অনুচিত। সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য যা ক্ষতিকর, ভীতি সৃষ্টি করে, তা পরিহার করা আবশ্যক।

শবে বরাতের মত পুণ্যময় রাতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ইবাদত বাদ দিয়ে হালুয়া রুটি তৈরি করা অনুচিত। এ রাতে যেমন ইবাদতে সওয়াব রয়েছে ঠিক তেমনই গর্হিত কাজেরও শাস্তি রয়েছে। এ রাতে বাড়িঘর, মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনা আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকা উচিত।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা অপচয় কোরো না, নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল ২৭)

সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে, গোটা রাত নফল ইবাদতে কাটিয়ে ফজর নামাজের মতো ফরজ ইবাদত যেন ছুটে না যায় কোনোভাবে। মহিমান্বিত এ রাত প্রতিটি মুসলিমের ইবাদতে কাটুক, সুখ সমৃদ্ধি কামনায় ভরে ওঠুক মন-প্রাণ। প্রতিটি মুসলিমের ইবাদত মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে কবুল হোক। ইবাদতময় হোক লাইলাতুননিসফি মিন শাবান।

দ.ক.সালাউদ্দিন.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট