স্টাফ রিপোর্টার
চুনারুঘাটের আমুরোড বাজারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়িসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের বিড়ি ও সিগারেট আমদানি করে চুনারুঘাটের বিভিন্ন বাজারে রমরমাভাবে বিক্রি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট চক্র।
গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে চুনারুঘাট উপজেলার ছন্ডিছড়া চা বাগানের নেপাল দেব এর দোকানে বিড়ি বিক্রির সময় এই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য মোঃ জনি মিয়াকে আটক করে আকিজ বিড়ি কোম্পানীর কর্মকর্তারা।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গল বার সকাল ১১টার দিকে চুনারুঘাট উপজেলার ছন্ডিছড়া বাগানের নেপাল দেব এর দোকানে নকল আকিজ বিড়ি ও সিগারেট সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় চা শ্রমিক জনতা আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের কর্মকর্তাকে অবগত করেন। পরে আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের হবিগঞ্জ অঞ্চলের জুনিয়র এরিয়া ম্যানেজার জিহাদ মিয়া ঘটনাস্থলে এসে নকল বিড়ি-সিগারেটসহ আকিজ কোম্পানীর বিড়ি বিক্রেতা মোঃ জনি মিয়াকে আটক করে। এসময় তার নিকট থেকে বিপুল নকল বিদেশী সিগারেট ও ৭ হাজার শলাকা নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়ি জব্দ করা হয়।
আটক জনি মিয়া চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গোছাপাড়া গ্রামের আব্দুল আাউয়ালের ছেলে। সে আকিজ বিড়ির আসামপাড়া টেরিটোরির সাব-ডিলার পয়েন্টের সি-বি ই।
চুনারুঘাট এরিয়ার সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার মো: জাকির হোসেন ভুইয়া নকল পণ্যসহ মোঃ জনি মিয়াকে আমুরোড বাজার আকিজ বিড়ি কোম্পানীর ডিলার পয়েন্টে নিয়ে যান। এসময় আকিজ বিড়ির ট্রেডমার্ক জাল করে নকল বিড়ি বিক্রির দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করতে চাইলে আমুরোড বাজার কমিটির সভাপতি মোস্তাক উদ্দিন আখঞ্জি বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দেন। তখন আকিজ বিড়ি কর্তৃপক্ষ আসামিকে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাক উদ্দিন আখঞ্জির হেফাজতে ছেড়ে দেয়াা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ নকল পণ্য সরবরাহকারী সিন্ডিকেট চক্রের মুলহোতা চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের তাহির মিয়ার পুত্র আল আমিন মিয়া আমুরোড বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ নকল বিড়ি-সিগারেটের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। যা আসামী মোঃ জনির জবানবন্দি ও ভিডিও ফুটেজ কর্তৃপক্ষের নিকট জমা আছে।
আমুরোড বাজার পরিচালনা কমিটিকে সুনিদির্ষ্টভাবে অভিযোগ করা হলেও কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনিক অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। গত ১৫ এপ্রিল আকিজ বিড়ি কোম্পানীর ইমপ্লয়ী মো: জনি মিয়াকে নকল বিড়ি বিক্রয়ের সময় মালামাল সহ ধরার পর নকল বিড়ি পরিবেশক/ডিলার আল আমিন মিয়ার নাম বেরিয়ে আসে। সে সময় আসামির বিরুদ্ধে নকল বিড়ি বিক্রির অপরাধে থানায় মামলার আবেদন করার পূর্বে বাজার কমিটির দাড়স্থ হলে বাজার কমিটির সভাপতি বিষয়টির সমাধানে ২দিন সময় চেয়ে কোম্পানীর লোকদের কে আশ্বস্থ করেন।
এদিকে অবৈধ পণ্য সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে বাজার কমিটির কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কমিটির এমন ভূমিকাকে মেনে নেওয়া যায় না বলে জানান তারা।
আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের হবিগঞ্জ রিজিওনের ডিস্টিক ম্যানেজার (ডি এম) মো. টিপু সুলতান জানান, অবৈধ ব্যবসার আড়ালে একটি অসাধু সিন্ডিকেট চক্র সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে সঠিকভাবে রাজস্ব প্রদানকারী কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নকল বিড়ি বন্ধ করতে আমরা পুলিশ, র্যাব, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি। নকল পণ্য বিক্রির ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সরকার অবৈধ পণ্য বিক্রির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স জারি করেছে। সকল পর্যায়ের প্রশাসন সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।
দ.ক.সিআর.২৫